চিকিৎসকদের জন্য নিজের ব্যক্তিগত বিমান দান

ব্রিটিশ টিভি ব্যক্তিত্ব ক্যারোল ভর্ডারম্যান। ব্রিটেনের শো-বিজ জগতে ছিল তার বিচরণ। সব কিছু দিয়ে শখ করে কিনেছিলেন একটি বিমান। ব্যক্তিগত সেই বিমানটির নাম দিয়েছেন মিলডার্ড। এক বছরেরও বেশি সময় অসংখ্যবার সেই বিমানের সঙ্গে নিজের ছবি তিনি পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। N242CV- সিরিজের বিমানটিকে শেষ পর্যন্ত তিনি দান করলেন ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইরত চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে।

ব্রিটেনে করোনাভাইরাস এখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছে প্রতিদিন ছয়শ’র বেশি মানুষ। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে ব্রিটেনের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাম তথা ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মীরা।

তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, যেমন পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) জরুরিভাবে বহন করা প্রয়োজন। এই কাজটি যাতে খুব দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, সে জন্য নিজের ব্যক্তিগত শখের বিমানটি দান করে দিলেন ভার্ডারম্যান।

৫৯ বছর বয়সী ক্যারোল ভর্ডারম্যান একজন টিভি ব্যক্তিত্ব। উপস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন। টুইটারের মাধ্যমে ক্যারোল জানান, ‘আমার মিলডার্ড এবং আমার নিজের দারুণ কিছু অ্যাডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে।

তবে এই মুহূর্তে আপনাদের আমি জানাতে চাই যে, এই বিমানটি এখন এমন কিছু মানুষের জন্য ব্যবহার হতে যাচ্ছে, যেটাতে করে খুব দ্রুততার সঙ্গে পিপিই বহন করা হচ্ছে। আমাদের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মীদের যখনই প্রয়োজন, দ্রুততার সঙ্গে যেন তাদের কাছে পিপিই পৌঁছে দেয়া যায়, সে জন্যই বিমানটিকে ব্যবহার করা হবে। #গোল মিলডার্ড। #এনএইচএস থ্যাঙ্কইউ’।

শুধুমাত্র নিজের বিমান দিয়ে করোনাভাইরাসের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামেননি ক্যারোল। একই সঙ্গে তিনি স্থবির হয়ে যাওয়া সময়ে যেন ছোট ছোট স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়া-লেখায় পিছিয়ে না পড়ে, সে জন্য ইউটিউবের মাধ্যমে গণিতের ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থাও করেছেন।

শিশুকালে ক্যারোল সবসময়ই একজন রয়্যাল এয়ারফোর্সের (ব্রিটেনের বিমান বাহিনী) একজন পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু নারী হওয়ার কারণে সেই সুযোগ তিনি আর পাননি। তাকে পাঠানো হয় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত ১৯৮০ সালে তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন একজন টিভি উপস্থাপিকা হিসেবে।

২০১৪ সালে তিনিই ব্রিটেনের প্রথন নারী, যাকে সম্মানজনক এয়ার ক্যাডেট শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে পাইলট হওয়ার খায়েশ পূরণ করেছেন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে শিখেছেন বিমান চালনা।

এসএইচ-০৮/০৬/২০ (অনলাইন ডেস্ক)