২ হিন্দু মেয়ের বিয়ে দিলেন মুসলিম প্রতিবেশী!

গোটা ভারতের সব মানুষ যে এখনও ধর্মীয় গোড়ামি, অন্ধ বিশ্বাসে মুড়ে যাননি তারই প্রমাণ যেন মহারাষ্ট্রের বাবাভাই পাঠান!
বিদ্বেষময় সমাজে বাবাভাই যেন সাক্ষাৎ একজন দেবদূত হয়ে দেখা দিলেন। প্রতিবেশী দুই অসহায় হিন্দু তরুণীর বিয়ে দিলেন তিনি, সম্পূর্ণ নিজের খরচে।

করোনা পরিস্থিতিতেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক হানাহানির কথা মাঝেমধ্যেই সামনে এসেছে। তাতে মৃত্যু হয়েছে, রক্তাক্ত হয়েছে মানবতা। কিন্তু গোটা দেশের সব মানুষ যে এখনও ধর্মীয় গোড়ামি, অন্ধ বিশ্বাসে মুড়ে যাননি তারই প্রমাণ যেন মহারাষ্ট্রের বাবাভাই পাঠান! আজকের এই দিনে দাঁড়িয়েও প্রতিবেশী দুই অসহায় হিন্দু তরুণীর বিয়ে দিলেন তিনি, সম্পূর্ণ নিজের খরচে। বিদ্বেষময় সমাজে বাবাভাই যেন সাক্ষাৎ একজন দেবদূত হয়ে দেখা দিলেন। নেটপাড়ায় ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে বাবাভাইয়ের কীর্তি। তাঁর এই মনোভাবের প্রশংসা এখন সর্বত্র।

জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের বাসিন্দা এই বাবাভাই পাঠান। পাশের বাড়িতেই থাকেন এক বিবাহবিচ্ছিন্না হিন্দু মহিলা। তাঁর দুই মেয়ের বিয়ে ছিল সম্প্রতি। কিন্তু বিবাহবিচ্ছিন্না হওয়ার পর থেকে বাপের বাড়ি ফিরে আসা ইস্তক মহিলা দুই মেয়েকেই বড় করেছেন অনেক কষ্টে। তাই বিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বাবাভাই পাঠানের কাছেই সাহায্য চান ওই মহিলা। পরোপকারী বলে এলাকায় পরিচিত বাবাভাই ফিরিয়ে দেননি তাঁকে, বরং নিজের খরচেই দুই হিন্দু তরুণীর বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

সম্প্রতি হয়ে গেল সেই বিয়ে। করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত সরকারি নির্দেশ পালন করেই আয়োজন করা হয়েছিল বিয়ের। গোটা পর্বে যা খরচ হয়েছে, পুরোটাই দিয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম বাবাভাই। আরিফ শাহ নামে এক সাংবাদিক প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনাটি সামনে আনেন। তারপর থেকেই বাবাভাইকে শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সকলে।

তবে, এই ঘটনাই কিন্তু প্রথম নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ্যে আসে এমনই এক ঘটনা। হিন্দু মেয়েকে দত্তক নিয়ে বড় করে তুলে তাঁর বিয়েও দেন কেরলের এক মুসলিম দম্পতি। রাজেশ্বরী নামে মেয়েটির বাবা-মা কেউ ছিল না। তাঁর বাবা কুলির কাজ করতেন আবদুল্লাদের বাড়ি ও কুন্নারিয়ামের খামারে। সেই সূত্রে যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল দুতরফে। এরপর সারাভানন ও তাঁর স্ত্রী মারা গেলে তাঁদের মেয়ে রাজেশ্বরীকে নিজেদের মেয়ের মতোই স্নেহ-ভালবাসার ছায়া দিয়ে বড় করেন আবদুল্লা দম্পতি। তারপর মন্দিরে গিয়ে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে নিজেদের পালিতা কন্যার বিয়েও দেন তাঁরা।

সব ধর্মই সমান ৷ মানুষই মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দূরত্ব তৈরি করে ৷ কিন্তু ধর্মের চেয়েও যে মানুষ বড়, তা যেন আমরা অনেক সময়ই ভুলতে বসি। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের বাসিন্দা বাবাভাই পাঠান বা কেরালার আবদুল্লারা যেন এই সংকটময় সময়ে সাক্ষাৎ দেবদূত হয়ে হাজির হন। বিশ্বাস রাখতে বলেন মনুষ্যত্বে।

এসএইচ-০৬/২৬/২০ (অনলাইন ডেস্ক)