নিজের সন্তানকে খেয়ে ফেলল মা

পশুপ্রেমীদের জন্য মন খারাপ করা খবর। সদ্য জন্ম নেওয়া চিতা শাবক হারিয়ে গেছে বর্ধমানের রমনাবাগান জঙ্গল থেকে। প্রথমে সে চিতাটিকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে যায়। চিতার শাবক পালিয়েছে বলে খবর রটে যায় শহরজুড়ে।

কোথাও না পেয়ে মনে করা হচ্ছিল তাকে খেয়ে ফেলেছে তার মা। অবশেষে সেই আশংকাই সত্যি হলো। মা চিতার মল পরীক্ষায় তেমনই প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি বন অধিদফতরের।

ক’দিন আগেই খুশির খবর এসেছিল বর্ধমান জুলজিক্যাল পার্ক রমনা বাগানে। নতুন সদস্য এসেছিল কোলজুড়ে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কালী জন্ম দিয়েছিল নতুন সন্তানের। ধ্রুব আর কালীর নতুন সন্তানকে ঘিরে মিনি জু রমনাবাগান অভয়ারণ্যে খুশির হাওয়া বইছিল। কিন্তু সাতদিনের বেশি স্থায়ী হলো না সেই খুশির আবহাওয়া।

গত শনিবার খাঁচা পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রথম এক বনকর্মী লক্ষ্য করেন শিশু চিতা নিরুদ্দেশ। ছুটে আসেন আঞ্চলিক বন কর্মকর্তারা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে ঘুম ছুটে যায় বন দফতরের কর্তাদের। তবে কি ত্রিস্তরের নিরাপত্তা বলয়ের ফাঁক গলে গায়েব হয়ে গেল ওই শিশু চিতা? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

আঞ্চলিক অফিসার দেবাশিস শর্মা বলেন, ওই চিতাটিকে তার মা কালী খেয়ে নিয়েছে। আমরা হয়তো তা ভাবতেই পারছি না কিন্তু পশু সমাজে এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কয়েক মাস আগে অন্য জুতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শিশু চিতাটিকে না পেয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম।

এরপর কালীর মল পরীক্ষা করা হয়। সে যে তার সন্তানকে খেয়ে ফেলেছে তা মল পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে। সাধারণত চিতা একসঙ্গে একাধিক সন্তানের জন্ম দেয়। একটি সন্তান প্রসব করা দেখে আমরা অবাকই হয়েছিলাম। হতে পারে প্রসবের পর পরই সে সবার অলক্ষ্যে একটি বা দুটি সন্তান খেয়ে ফেলেছিল।

বর্ধমানের গোলাপবাগ সংলগ্ন রমনাবাগান মিনি জুকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল আগেই। আকর্ষণ বাড়াতে গত বছরের শেষ দিকে উত্তরবঙ্গ থেকে দুটি চিতাবাঘ ধ্রুব ও কালীকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই রমনাবাগান জুলজিক্যাল পার্কে। পার্কের আকর্ষণ বাড়াতে চিতা যুগলের জন্য প্রবেশ পথের একদম সামনেই তৈরি করা হয়েছিল বিশাল এনক্লোজার।

গত মার্চ মাস থেকে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন শুরু হওয়ায় এই পার্কও দর্শকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও তা বন্ধই রয়েছে। সেই নির্জন পরিবেশে নতুন সন্তানের জন্ম দিয়েছিল কালী। ধ্রুব ও কালীর সন্তান জন্ম হওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলেন অভয়ারণ্যের সঙ্গে যুক্ত সকলেই।

ফের জু খুললে ওই শিশু ও তার বাবা মা দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই হতাশা নেমে এলো অভয়ারণ্যে।

এসএইচ-০২/২২/২০ (অনলাইন ডেস্ক)