লাল কালিতে লেখা, ‘তোমার সব কাজের দায়িত্ব নিতে পারলাম না বাবা।’

মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল হওয়ার পর এক পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ভারতের কোচবিহারের দিনহাটা থেকে। মানসিক অবসাদের কারণেই ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, ওই ছাত্রীর নাম বর্ণালী বর্মণ (১৬)। সে দিনহাটার গোপালনগর এমএনএন হাইস্কুলের ছাত্রী। তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে লাল কালিতে লেখা ছিল, ‘তোমার সব কাজের দায়িত্ব নিতে পারলাম না বাবা।’

বর্ণালীর চাচা প্রসেনজিৎ বর্মণ জানান, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে বর্ণালী একটু দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিল। গতকাল সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল বলে ঘোষণা করার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। কথা কম বলতে থাকে। বিকেলে নিজের ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ করে পড়তে বসে বর্ণালী।

এরপর অনেকটা সময় কেটে গেলেও মেয়ে বাইরে বের না হওয়ায় চিন্তায় পড়েন পরিবারের সবাই। অনেক ডাকার পরেও সাড়া মেলেনি। শেষে জানলার ওপর দিয়ে বর্ণালীর মা দেখতে পান, মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। এর পরেই পুলিশ খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

বর্ণালীর বাবা সারদারঞ্জন বর্মণ বলেন, ‘আমি চাই না আমার মতো আর কারও কোল খালি হোক। আমি সরকারের কাছে আবেদন করব, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের মনের ইচ্ছাটা দেখুন। ছাত্র-ছাত্রীদের মনের ভিতর ঢুকে তারা কী চাইছে সেটা জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় মিটিং, মিছিলে করোনার কোনো সমস্যা হলো না। শুধু পরীক্ষার সময়েই সমস্যা। সামাজিক দূরত্ব মেনে কি পরীক্ষা নেওয়া যেত না। যারা সারা বছর ধরে পড়াশোনা করল তাদের মনের অবস্থাটা কী সেটা বুঝতে হবে। সরকার সেটা বুঝলে হয়তো আজ আমার মেয়ে চলে যেত না।’

এসএইচ-১৪/০৯/২১ (অনলাইন ডেস্ক)