চুল বিক্রি করে বছরে ২০০ কোটি আয়!

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুমালায় অবস্থিত বেঙ্কেটেশ্বর মন্দির যেটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দির বলে খ্যাত। প্রচুর ভক্ত এবং অনুসারীরা ভিড় জমান এই মন্দিরে। তবে, অবাক করার মতো বিষয় হলো, মন্দিরটির বার্ষিক আয়ের উৎস হলো ভক্তদের মাথার চুল।

যার ১০ ভাগের এক ভাগই আসে ভক্তদের দান করা চুল থেকে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুক অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষের সমাগম ঘটে এই মন্দিরে। প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এই মন্দিরে দৈনিক প্রায় ৭৫ হাজার ভক্তের আগমন ঘটে। মন্দিরটিতে অনেক ভক্তরা বিভিন্ন মানত নিয়ে আসেন। তাদের অগাধ বিশ্বাস- ‘অর্থ কিংবা পরিবারের মঙ্গল কামনায় তাদের এই চুল দান এক ধরণের ত্যাগ স্বীকার করা।’

কিন্তু ভক্তদের চুল বিক্রি করে চলছে লাখ লাখ টাকার ব্যবসা। এই চুলগুলো বিক্রি করে মন্দিরগুলো আয় করছে বছরে ২০০ কোটি টাকা। বেঙ্কেটেশ্বর মন্দিরসহ ভারতের আরও কয়েকটি মন্দির এই একই কাজটিকে আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছে। ভারতের মন্দিরগুলো বছরে চুল বিক্রি থেকে ১০০ মিলিয়নের বেশি টাকা সংগ্রহ করে থাকে। ২০১৯ সালে অনলাইন নিলামে এক মন্দির কর্তৃপক্ষ ১৫৭ টন চুল বিক্রি করে, যা থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ডলারেরও বেশি।

ভক্তদের বিক্রিত চুলগুলো পরচুলা ও হেয়ার এক্সটেনশনের কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার জনপ্রিয়তা সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে আছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও। অধিকাংশ পরচুলা ও হেয়ার এক্সটেনশন আসে চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থাকে।

তিরুপতি বালাজি বা বেঙ্কেটেশ্বর ভগবান বিষ্ণুর অবতার। পুরাণের রীতি অনুযায়ী মন্দিরে গিয়ে দেবতার কাছে নিজের চুল সমর্পণ করে অনুগ্রহ চাইতে হয়। এদিকে মাথা মোড়ানোকে হিন্দু পুণ্যার্থীরা আবার পাপমোচনের অংশও মনে করেন।

মন্দিরটিতে এক হাজার ৩২০ জন নাপিত সারা বছর কাজ করেন। প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের মাথা মোড়ানো হয়। ২০০৬ সাল থেকে নারী পুণ্যার্থীদের মাথা মোড়ানোর জন্য নারী নাপিতের ব্যবস্থা করা হয়। পূর্বে নদীতে চুল ফেলে দেওয়া হলেও বর্তমানে বিক্রির জন্য সারা বছরই চুল সংগ্রহ করে মন্দির কর্তৃপক্ষ।

এসএইচ-০৫/০৯/২২ (অনলাইন ডেস্ক)