দস্যুদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ২০০ গ্রামবাসী নিহত

নাইজেরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য জামফারায় সশস্ত্র দস্যুদের হামলায় অন্তত ২০০ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। স্থানীয় অধিবাসীদের বরাতে আলজাজিরা এমন খবর দিয়েছে।

গত সপ্তাহে দস্যুদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী। জবাবে নিরীহ মানুষদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। স্থানীয় সরকার কর্মকর্তারা বলছেন, ৫৮ অধিবাসী গণহত্যার শিকার হয়েছেন।

শনিবার গ্রামে ফিরে আসা স্থানীয়রা নিহতদের দাফনের আয়োজন করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাবে।

গুসামি বনাঞ্চল ও পশ্চিম সামরি গ্রামে সোমবার সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় শতাধিক দস্যু নিহত হন। যাদের মধ্যে তাদের দুজন নেতাও ছিলেন।

মঙ্গলবার জামফারার আনকা এলাকায় আটটি গ্রামে প্রবেশ করেন তিন শতাধিক বন্দুকধারী। এরপর তারা এলোপাতাড়ি গুলি করা শুরু করেন। সেখানে ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

আনকা ও বুক্কিয়ুম জেলার ১০টি গ্রামে বন্দুকধারীরা আক্রমণ চালায়। তারা স্থানীয়দের তাক করে গুলি ছোড়ে, সম্পদ লুট করে ও বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

কুরফা দিনয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবান্দি হামিদু বলেন, চোখের সামনে যাকে পেয়েছে, তাকেই গুলি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দশটির গ্রামে অন্তত ১৪০ জনকে দাফন করা হয়েছে। এখনো অনেক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খোঁজ চলছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারি বলেন, অপরাধী চক্রকে উৎখাত করতে সামরিক বাহিনীকে আরও অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। যারা জনগণের মধ্যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন, সমাজকে অবরুদ্ধ করে তাদের কাছ থেকে অবৈধ কর আদায় করছেন, তাদের উৎখাত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, নিরপরাধ লোকজনের ওপর সাম্প্রতিক হামলা বেপরোয়া গণহত্যার কাজ। হামলাকারীরা এখন আমাদের সামরিক বাহিনীর অব্যাহত চাপে রয়েছেন।

২০২০ সালের শেষ দিক থেকে নাইজেরিয়ায় অপহরণ ও সহিংস অপরাধ আকস্মিকভাবে বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে জোর চেষ্টা চালাতে হচ্ছে।

গেল বছর স্কুল ও কলেজে হামলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন দস্যুরা। এসব শিক্ষার্থীর অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা এখনো আটক রয়েছেন।

ভূমি ও সম্পদ নিয়ে যাযাবর পশুপালক ও স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে লড়াই চলছে বহুদিন ধরে। সেখান থেকে উদ্ভূত প্রতিশোধমূলক হামলা এখন ব্যাপক অপরাধী তৎপরতায় রূপ নিয়েছে।

গেল সপ্তাহে নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ৫৩৭ সশস্ত্র দস্যু ও অন্যান্য অপরাধীকে হত্যা করেছেন। গ্রেফতার করেছেন ৩৭৪ জনকে।

এছাড়া অপহৃত হওয়া ৪৫২ বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। কুখ্যাত গ্যাং নেতা বেলো তুর্জির অনুগত দস্যুরা গত মাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। জঙ্গলভিত্তিক তাদের ক্যাম্পে অভিযান চালিয়েছে সামরিক বাহিনী।

এই সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ নিতেই দস্যুরা গ্রামে ঢুকে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালায় বলে দাবি করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক কাবির আদামু।

এসএইচ-০৪/০৯/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)