একগাছে ৪০ রকমের ফল!

সাধারণত এক গাছে একই রকমের ফল ফলে থাকে। তবে অনেক সময় কলম পদ্ধতি অবলম্বনে একই গাছে একের বেশি ফলও ধরে। কিন্তু এবার একটু ভিন্নতার ছোঁয়া দেখা মিলল এই কলম পদ্ধতিতে।

আর এই ভিন্নতা এনেছেন ‍যুক্তরাষ্ট্রের স্যাম ভেন অ্যাকেন। একজন ভিজ্যুয়াল আর্টস অধ্যাপক স্যাম উদ্ভাবন করেছেন এমন একটি উদ্ভিদ যেটি ৪০ প্রকারের ভিন্ন ভিন্ন ফল দেয়। এমন গাছেরও যে অস্তিত্ব সম্ভব সেটিই প্রমাণ করেছেন স্যাম। চেয়েছিলেন বিরল প্রজাতির কিছু ফলকে সংরক্ষণ করবেন। মানুষ চাইলে যেকোনো অসাধ্যই সাধন করতে পারে সে কথাটি যেন ‘স্যামের’ সাথে একদম মানানসই।

’ট্রি অফ ৪০’ নামে বিখ্যাত সেই উদ্ভিদটি। গাছটিতে বরফ, সালু, এপ্রিকট, চেরি এবং নেকটারিনের মতো ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ফল হয়। এ গাছটির এমন ফল উৎপাদনের পেছনে আছে ‘স্যামের’ নিরন্তর প্রচেষ্টা, গবেষণা এবং দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার এ উদ্ভাবনীর যাত্রাটা শুরু হয় ২০০৮ সালে।

নিউ ইয়র্কের জেনেভার অসংখ্য মিশ্র এবং দেশজ প্রজাতির বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির ফলের একটি বাগান বন্ধ হওয়ার খবর শুনে স্যাম সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে বাগানটি তিনি বিলুপ্ত হতে দেবেন না। তাই নিজেই কিনে নেন সেই বাগান। ১৫০- ২০০ বছর পুরনো গাছ রয়েছে সেই বাগানটিতে।

স্যামের প্রয়াস ছিল দুর্লভ প্রজাতির ফল গাছগুলোকে একত্রে রাখা। শুরু করলেন কলম করার পদ্ধতি। গ্রাফটিং কৌশলগুলোর সহায়তায় স্যাম উদ্ভাবন করেছেন এ উদ্ভিদটি। শুরুতে গাছগুলো থেকে কলম নিয়ে একটি গাছে রূপান্তরের চেষ্টা করতে লাগলেন।

গাছটির বয়স দুই বছর হলে চিফ গ্রাফটিং নামের নতুন পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। ফলের কলিসহ অন্য একটি গাছের ফালি, পরীক্ষা করা গাছটির মধ্যে কেটে সেখানে স্থাপন করেন। এভাবে গাছগুলো সময় নিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। পাঁচ বছর ধরে গবেষণা চালানোর পর স্যাম প্রথম ৪০টি ফলের বৃক্ষের আবিষ্কার করতে সক্ষম হলেন।

৪০টি ফলের বৃক্ষটি বিক্রিও করা হয়ে থাকে। তার মূল্য ১৯ লাখ টাকা। স্যাম প্রায় আড়াইশ’ প্রজাতির ওপর কাজ করেছেন। স্যামের ইচ্ছে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের গাছ লাগানো। পোর্টল্যান্ডের কাছে দক্ষিণ মেইনে তার নিজস্ব ফল বাগান করার পরিকল্পনা কাছে তার। কেবল বৈপ্লবিক শিল্পকর্ম হিসেবে নয়, ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছেন স্যাম এবং তার ৪০টি ফলের বৃক্ষ।

এসএইচ-০৮/২০/২২ (অনলাইন ডেস্ক)