ডিজিটাল ভিক্ষুক!

ইন্টারনেটের ছোঁয়ায় বদলে গেছে অনেক কিছুই। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো পরিবর্তন এসেছে ভিক্ষাবৃত্তিতেও!

কোভিড পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে শুরু করে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠান অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। এ ছাড়া, ইদানীং অনলাইনে টাকা দেওয়া-নেওয়ার মাত্রাও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে কাউকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখেছেন কখনো? এমন কাণ্ডই ঘটিয়েছেন রাজু প্যাটেল নামে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি।

ভারতের বিহার রাজ্যের বেতিয়া স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়ানো সেই ভিক্ষুকের গল্প এখন অন্তর্জালে ভাইরাল। তিনি ডিজিটাল মাধ্যমেই ভিক্ষা গ্রহণ করছেন। পথচারীদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাইতে তিনি গলায় ঝুলিয়েছেন কিউআর কোড। স্ক্যান করে সহজেই সাধ্যমতো আপনি তাকে আর্থিক সাহায্য করতে পারবেন।

দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, রাজু প্যাটেল বিহারের বেতিয়ার বাসিন্দা। এখন বয়স ৪০। কয়েক দশকে তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হলেও সময় পাল্টে গেছে। এসেছে ডিজিটাল যুগ। আর যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে গেছেন রাজু প্যাটেলও।

অন্যের সাহায্য নিয়েই তিনি চলেন। ইদানীং দেখা যায়, রাজুর গলায় ঝোলানো একটি কার্ড, তাতে কিউআর কোড দেওয়া। অনেককেই দেখা গেল, সেই কিউআর কোড স্ক্যান করে তাকে অর্থ দিতে।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই) দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজু বলেন, ‘আমি ডিজিটালিও ভিক্ষা নিই। নিজের পেট ভরানোর জন্য এই ব্যবস্থা আমায় করে নিতে হয়েছে। মূলত ফোনপের মাধ্যমে সাহায্য নিয়ে থাকি।’

রাজু প্যাটেল আরও বলেন, ‘ভিক্ষা করা ছাড়া জীবিকা নির্বাহের আর কোনো পথই আমার জানা নেই। করোনা মহামারির পর থেকে অনেকেই ভিক্ষা দিতে অস্বীকার করেন। তারা বলেন, তাদের কাছে খুচরা টাকা নেই। অনেকেই বলেন, বিভিন্ন ই-ওয়ালেট অ্যাপ রয়েছে। তাই, তারা এখন আর নগদ টাকা বহন করেন না। আর এর থেকেই মনে এসেছে ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণ করার ভাবনা। এরপরই একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ই-ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট খুলেছি। এখন কেউ খুচরা নেই বললেই ই-ওয়ালেটে অর্থ পাঠানোর কথা বলি।’

বিহারের এই ‘ডিজিটাল ভিক্ষুক’-এর কাহিনি জানাজানি হতেই তা নেটদুনিয়ায় তুমুল আলোড়ন তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর লাইক, শেয়ার, কমেন্ট হচ্ছে।

তবে রাতারাতি এভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করা রাজুকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত নেটিজেনরা। একদল তার এই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাকে ধন্য-ধন্য করছেন। আবার অনেকেই কটাক্ষ করছেন। বলছেন, গরিবিয়ানার ছবিটা তো আর বদলাচ্ছে না, এটা দারিদ্র্যেরই আরেকটা রূপ।

এসএইচ-১৩/১০/২২ (অনলাইন ডেস্ক)