বিশ্বের ভুতুড়ে ৫ জাহাজ!

বিশ্বের বিখ্যাত ও বিলাসবহুল অনেক জাহাজের ভাগ্যে জুটেছিল সলিলসমাধি। কয়েকশ বছর আগের এমন অনেক জাহাজ প্রায়ই মাঝসমুদ্রে দেখতে পাওয়া যায়। জাহাজগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে যাত্রী নিয়ে! অনেক নাবিকই জাহাজগুলোকে ভুতুড়ে বলে দাবি করেছেন। এমনই কিছু ভুতুড়ে জাহাজের বিষয়ে সবিস্তারে জানা যাক—

মেরি সেলেস্টে
শুরুতেই আলাপ করা যাক, বিখ্যাত জাহাজ মেরি সেলেস্টেকে নিয়ে। ১৮৭২ সালের নভেম্বরে নিউইয়র্ক থেকে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করে। এর প্রায় এক মাস পর জাহাজটি আবিষ্কার করে ব্রিটিশ উদ্ধারকারী দল। যেখানে কোনো ক্রু কিংবা যাত্রী ছিল না, একাই জাহাজটি ভেসে বেড়াচ্ছিল। মেরি সেলেস্টে জাহাজ সর্বশেষ যেদিন সমুদ্রে যাত্রা শুরু করে, সেদিন এতে ১০ জন যাত্রী ছিল বলে জানা যায়। তাদের সন্ধান পরবর্তীতে আর মেলেনি। জাহাজটির একটি লাইফবোট নিখোঁজ ছিল। জাহাজে থাকা খাবারসহ অ্যালকোহল কিছুই পাওয়া যায়নি পরবর্তীতে। তবে এর যাত্রী বা ক্রুরা কোথায় গেছে, জানা যায়নি আজও।

উদ্ধারের পর জাহাজটি জিব্রাল্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করে। তবে নিখোঁজ যাত্রীদের কোনো সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। জাহাজটিতে জলদস্যুরা আক্রমণ চালিয়ে সবাইকে মেরে ফেলেছে বলে খবর ছড়ায়। তবে এর আসল রহস্য আজও অমীমাংসিত।

ফ্লাইং ডাচম্যান
দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান কিন্তু কোনো জাহাজের নাম নয়, নাবিকের নাম। ১৭ শতাব্দীতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ফ্লাইং ডাচম্যান। সমুদ্রযাত্রার সময় কেপ অব গুড হোপের কাছে এসে উত্তাল ঝড়ের কবলে পড়েছিলেন নাবিক। দুঃসাহসী ক্যাপ্টেন অনেক চেষ্টা করেও জাহাজ ও যাত্রীদের বাঁচাতে পারেননি। এই জাহাজটিকে মাঝসমুদ্রে অনেকবার দেখা গেছে বলে প্রচলিত রয়েছে।

এমভি জয়িতা
আরেকটি বিখ্যাত ভুতুড়ে জাহাজ এমভি জয়িতা। এ জাহাজটি ছিল আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে তৈরি তৎকালীন সময়ের অন্যতম আধুনিক প্রযুক্তির একটি বিলাসবহুল নৌযান। জাহাজটির নকশা এমন ছিল যে, চাইলেও ডোবানো সম্ভব নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নৌযানটি কাজে লাগানো হয়। ১৯৫৫ সালে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে সামোয়া থেকে টোকিলাও দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয় জয়িতা। রওনা হওয়ার দুই দিনের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছার কথা থাকলেও জাহাজের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পাঁচ সপ্তাহ অনুসন্ধানের পর নৌযানটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেলেও কোনো যাত্রী ছিল না। এই জাহাজটিকে ভুতুড়ে মনে করা হয়।

আউরাং মিডান
আউরাং মিডানের গল্পের সূত্রপাত ১৯৪৭ সালে। সেবার দুটি আমেরিকান জাহাজ একটি রহস্যময় কল পেয়েছিল। কলার তাঁর পরিচয়ে বলেছিল, তিনি আউরাং মিডান নামের একটি ডাচ জাহাজের ক্রু। তিনি দাবি করেন, জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং ক্রুদের প্রত্যেকেই মরে গেছে। বাকি যে কজন আছে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে দেখা গেছে আউরাং মিডান জাহাজটি অক্ষত থাকলেও এর প্রত্যেকে মরে পড়ে আছেন। কিন্তু মৃত্যুর কারণ অজানা।

লেডি লোভিবন্ড
বিশ্বের আলোচিত সব ভুতুড়ে জাহাজের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের। এর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত জাহাজ হচ্ছে লেডি লোভিবন্ড। এ জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন সাইমন রিড। ১৭৪৮ সালে ক্যাপ্টেন সাইমন রিড তাঁর সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পর্তুগালের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু জাহাজের আরেক কর্মকর্তা জন রিভারস সাইমনের স্ত্রীর প্রেমে পড়ে যান। তিনি নবদম্পতির প্রেম সহ্য করতে পারলেন না। ফলে জন সাইমনকে খুন করে জাহাজের দায়িত্ব নিয়ে নেন। এরপর রহস্যজনকভাবে একে একে মারা যায় সবাই। প্রচলিত আছে, ৫০ বছর পরপর নাকি জাহাজটি সমুদ্রে ভেসে ওঠে। সেই সঙ্গে ভেসে ওঠে মৃত মানুষগুলো।

এসএইচ-১০/১৯/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)