কারফিউ অমান্য করে সুদানে বিক্ষোভ

প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে সরিয়ে সদ্য ক্ষমতায় বসা সেনাবাহিনীর জারি করা সান্ধ্য আইন অমান্য করে রাতভর সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেছে সুদানের বিপুল মানুষ। দেশটির রাজধানী খার্তুমের সড়কগুলোতে এখনো বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী অবস্থান করছেন।

শুক্রবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।

প্রায় তিন দশক ধরে দেশ শাসন করা প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে জনগণের বিক্ষোভের মুখে গতকাল গ্রেপ্তার করে শাসনভার নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী। পরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার রাতে ছয় ঘণ্টার সান্ধ্য আইন জারি করে সামরিক পরিষদ।

বিবিসির খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনীর জারি করা কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে রাজধানী খার্তুমের রাস্তায় অবস্থান নেয় বিপুল বিক্ষোভকারী। সেনাবাহিনীকে বশির শাসনামলেরই অংশ অ্যাখ্যা দিয়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়।

চলমান এ অচলাবস্থা বিক্ষোভকারী ও সেনাবাহিনীকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনী ও মিলিশিয়ার একটি অংশ এক অপরের প্রতি বন্দুক তাক করতে পারে, তেমন বিপদের আশঙ্কাও আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের আফ্রিকা বিষয়ক সম্পাদক উইল রস।

এ অবস্থায় জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন সব পক্ষকে শান্ত হবার আহ্বান জানিয়েছে।

১৯৮৯ সালে ব্রিগেডিয়ার ওমর আল বশির আরও কিছু ইসলামপন্থী সেনাকর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সুদানের সর্বময় ক্ষমতা দখল করেন। তিনিই হচ্ছেন দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর তাকে উৎখাতের চেষ্টা হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। গত ডিসেম্বর থেকে বশিরের বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ চলছিল এবং এসময় সহিংসতায় বেশ কিছু লোক নিহত হয়।

ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গতকাল ৭৫ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে গ্রেপ্তার করে দেশটির সেনাবাহিনী। বশিরের গদিচ্যুত করার খবর প্রচারিত হতে না হতেই রাজধানী খার্তুমসহ গোটা দেশের রাস্তাঘাটে বাধভাঙ্গা উল্লাসে জনতার ঢল নামে। তারা নেচে গেয়ে নানারকম বাদ্য বাজিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। কিন্তু তাদের উৎসবের আমেজ উবে যায় সেনাবাহিনীর শাসনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সংবাদের পাওয়ার পরই। এরপর বিক্ষোভকারীরা সেনা সদরের বাইরে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

সুদান পেশাজীবী সংঘের সদস্য সারা আবদেল জলিল জানান, ‘এটা একই শাসনব্যবস্থার ধারাবাহিকতা। ফলে এর প্রতিরোধে শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া আমাদের কাজ।’

এসএইচ-১৫/১২/১৯ (অান্তর্জাতিক ডেস্ক)