বাংলা বললেই বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দিল্লিতে বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিজেপির অভিযোগ, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা রাজ্যের সম্পদ গ্রাস করছে। তারা এনআরসি করার মধ্য দিয়ে এমন নামে আখ্যায়িত করে ওইসব ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ উৎখাত করতে চায়।

তিনি বলেন, নাগরিকপঞ্জি আসলে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিশোধ। এনআরসির উদ্দেশ্য মুসলিমদের বাদ দেয়া। আমার রাজ্যে বিজেপিকে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় এভাবেই এনআরসি ও বিজেপির বিরুদ্ধে শুক্রবার ক্ষোভ ঝাড়েন মমতা। বিধানসভায় তিনি আরো জানান, এই ইস্যুতে একই অবস্থানে আছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার।

১৮৪ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এনআরসি নিয়ে বিধানসভায় মমতা বলেন, আমি নিতিশ কুমারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, তার রাজ্যেও এনআরসি করতে দেবেন না তিনি।

তিনি বলেন, বিজেপি এনআরসিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে, বাঙালি ও অবাঙালি, বাঙালি ও রাজবংশীদের মধ্যে ফাটল ধরাতে।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি প্রণয়নের কাজ শুরু করতে চায়। তারা চায় জনগণের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে। কিন্তু আমরা কখনোই বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেবো না।

মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় ‘অ্যাডভাইজরি’ দিয়ে পরিচালিত হয় গণতন্ত্রের সব ভিত্তি। এনআরসির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বহু প্রকৃত ভারতীয় নাগরিককে। এই অস্বস্তিকর অবস্থা আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দিল্লিতে বাংলাভাষায় যেসব মানুষ কথা বলছেন তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে বাংলাদেশী হিসেবে। যদিও সর্বোপরি তারা বাংলাভাষী।

তিনি বলেন, এমনকি শরণার্থী কার্ড দেয়া হয়েছিল যাদেরকে তাদের বিষয়টিও আমলে নেয়নি এনআরসি কর্তৃপক্ষ। এসব কার্ড দেয়া হয়েছিল দেশভাগের সময়। ওই সময় যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে আসামে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছিলেন তাদেরকে দেয়া হয়েছিল এই কার্ড। পরিস্থিতির কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে এসেছিলেন যেসব মানুষ তাদের কথা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।

এসএইচ-২০/০৭/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)