চিকিৎসা উপকরণ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে চীন

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন মাহমারি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গোটা বিশ্ব অচল হয়ে পড়েছে এ ভাইরাসে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক বলেছে, করোনায় এশিয়ার প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়বে।

যেখান থেকে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল করোনাভাইরাস। পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। উল্টো সেই চীনই এখন করোনার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বেচে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর থেকে বিপুল অর্থ আয় করছে। তবে চীন যে সরঞ্জাম সরবরাহ করছে, তার মান নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

ইতালি, স্পেন, ফ্রান্সের মতো যে দেশগুলো করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত, তাদেরকেই মূলত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে শুরু করেছে চীন। একে সাহায্য বলে দাবি করলেও আদতে চিকিৎসা উপকরণের বিনিময়ে মোটা অর্থের লেনদেন করছে চীন। পাশপাশি আমেরিকা নিজে যখন করোনা নিয়ে বিপর্যস্ত, সেই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশগুলোকে চিকিৎসা উপকরণ পাঠিয়ে কূটনৈতিক সমীকরণেও এগিয়ে থাকতে চাইছে চীন।

যেমন করোনায় বিধ্বস্ত স্পেনকে ৩৪৫৬ কোটি টাকার মেডিক্যাল সরঞ্জাম পাঠিয়েছে চীন। যদিও সেই সরঞ্জামের মধ্যে থাকা অনেক কিছুই নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। গোটা বিশ্ব করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকেই কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব মহামারীর এই সময়টাও কাজে লাগাতে চায় চীন।

নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঝেরে ফেলতে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং চিকিৎসকদের পাঠাচ্ছে বেইজিং। এতে তাদের ইমেজ যেমন উজ্জ্বল হচ্ছে, সেরকমই দানের নামে চিকিৎসা উপকরণ পাঠিয়ে বিভিন্ন দেশের থেকে মোটা টাকা আয়ও করছে চীন সরকার।

স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যালভাডর ইলা নিজে জানিয়েছেন, চীন থেকে তারা ৯৫০টি ভেন্টিলেটর, ৫৫ লাখ টেস্টিং কিট, ১.১ কোটি গ্লাভস এবং ৫০ কোটি মুখের মাস্ক কিনেছেন। কিন্তু ইতোমধ্যে গুণগত মান খারাপ বলে অভিযোগ তুলে স্পেন ৯ হাজার টেস্টিং কিট চীনে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। পরে চীন স্বীকার করে নেয়, যে সংস্থার থেকে তারা এই কিট কিনেছিল, তাদের করোনা টেস্টিং কিট তৈরির অনুমোদনই ছিল না।

স্পেনের পাশাপাশি ইতালিতেও জাহাজে করে বিপুল পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়েছে চীন। পাশাপাশি সফলভাবে লকডাউন কার্যকর করতে চীনের পরামর্শ নিয়েছে ইতালি। চীন সরকার জানিয়ে দিয়েছে, করোনা আক্রান্ত বিশ্বের ৮২টি দেশকে সহযোগিতা করবে তারা। ফলে করোনার চিকিৎসা সরঞ্জাম বেচেই চীনের বিপুল টাকা আয় হবে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে ইতোমধ্যে সাড়ে ৩৭ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮ লাখ।

এসএইচ-১১/৩১/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)