মালয়েশিয়ায় করোনা নিয়ন্ত্রণে চমক দেখাচ্ছে সরকার

করোনা চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। প্রাণঘাতী ভাইরাসে শামিল হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলে। সেখানে মালয়েশিয়া দেখাচ্ছে চমক। কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মালয়েশিয়া কিভাবে সফলতার সাথে মোকাবিলা করছে তার অভিজ্ঞতা অন্য ১০টি দেশের প্রধানের সাথে আলোচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। কোভিড-১৯ পরবর্তী আসিয়ান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় আসিয়ান দেশভুক্ত নেতাদের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্পেশাল সামিটে এ সফলতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

ভাইরাসকে পরাজিত করতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও কমছে প্রতিদিন। মৃত্যুর হারও আগের মত আর নেই। যাদের মৃত্যু হচ্ছে তাদের অধিকাংশই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভোগছিলেন আগে থেকেই।

দেশটিতে আতঙ্কের বদলে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি। যেখানে প্রতিদিন ২শ’ এর বেশি আক্রান্ত হতো সেখানে বর্তমানে কমে গেছে বহু অংশে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে সুস্থ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত।

মুভমেন্ট কন্ট্রোল ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বুধবার মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রি-কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এর সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

মঙ্গলবার সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৯৮৭ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৪৭৮ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৮২ জন।

তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দেশটিতে চলছে লকডাউন, মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও)।

ইতিমধ্যেই চলমান লকডাউনে সেদেশের সরকার কর্তৃক ঘোষণাকৃত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছে সেদেশের নাগরিকরা। এছাড়া দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি অভিবাসীদের জন্য ভিসা ফি (লেভি) ২৫ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। চালু করা হচ্ছে বিভিন্ন কল কারখানা। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেই খুলে যাবে সব।

সরকারের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এরই মধ্যে সে দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব উস্তাজ এভিট লিউ খাদ্য সহায়তা দিয়ে দেশি-বেদেশিদের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। দেশটির বিভিন্ন প্রজেক্টে দেশি-বিদেশি শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন এভিট লিউ।

এছাড়া সেদেশের অবস্থান করা বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিরলস চেষ্টাসহ খাদ্য সহায়তা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশি কর্মিদের দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। তবে রাজধানি শহরের বাইরে এ খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কারণ কুয়ালালামপুরের বাহিরে যারা অবস্থান করছেন তারা বেশি খাদ্য সংকটে রয়েছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন।

এছাড়া যেসকল মালিক ও কোম্পানি শ্রমিকদের বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে সেইসব মালিকপক্ষকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে তদারকি করা হচ্ছে এবং সেদেশের সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। যাতে করে বাংলাদেশী কর্মিরা কোন প্রকার অভুক্ত না থাকতে হয়।

বিগত দিনে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে মালিকের বদলে বিভিন্ন এজেন্টের নামে ভিসা করে আজ করোনার বিধিনিষেধের কারণে তারা সমস্যায় ভুগছেন। পাশাপাশি অবৈধরাও রয়েছেন খাদ্য সংকটে। এমন পরিস্থিতিতে কমিউনিটি সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে যার যার মত করে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন।

এসএইচ-১৫/১৫/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)