‘লিডার নয় ক্যাডার’ সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে মমতা

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বহুল আলোচিত বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানর্জি বলেছেন, বিজেপিবিরোধী শক্তিগুলোকে এক হতে হবে। নিকট ভবিষ্যতে ভালো কিছু আসবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করছি।

স্থানীয় সময় বুধবার দিল্লিতে সোনিয়ার বাসভবন ১০ জনপথে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা বলেন, সোনিয়া গান্ধী তার বাসভবনে আমাকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এ সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়িপাতা ও করোনা পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের প্রস্তুতি নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা প্রশ্নে তৃণমূল নেত্রী বলেন, সোনিয়ার সঙ্গে বিজেপিবিরোধী ঐক্য নিয়ে কথা হয়েছে। এটি ছিল খুবই ভালো ও ইতিবাচক বৈঠক। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ইতিবাচক ফল বেরিয়ে আসবে।

পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনকে তিনি প্রত্যাশার ভোট আখ্যায়িত করে নাম দিয়েছেন ‘হোপ-২৪’। ১০ জনপথে দুই নেত্রীর মধ্যে অন্তত এক ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে।

২০১৮ সালের আগস্টে শেষ বারের মতো তাদের বৈঠক হয়েছিল সোনিয়ার বাসভবনেই। তখন তাকে ভারতজুড়ে বিজেপিবিরোধী মহাজোটের কলকাতার মহাসম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়েছিলেন মমতা।

কলকাতার ব্রিগেডের ওই সম্মেলনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধী কিংবা রাহুল গান্ধী কেউ যোগ দেননি। মোদির নেতৃত্বেই ২০১৯-এ দ্বিতীয়বারে মতো ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি।

এরপর প্রায় সাড়ে তিন বছর পর সোনিয়া-মমতার বৈঠকটি হয়েছে। এবারও আলোচনায় সেই বিজেপিবিরোধী মহাজোট ইস্যু। তবে এই উদ্যোগ তৃণমূলের নয় কংগ্রেসের। সোনিয়াই মমতাকে ডেকেছিলেন।

মোদিবিরোধী হিসেবে ভারতের জাতীয় পর্যায়ে মমতাই এখন অন্যতম মুখ। সে কারণে বিজেপি বিরোধীতায় মহাজোট তৈরি করে মমতাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ও এখন।

যদিও মমতা নেতা বা নেত্রী নন বরং একজন সাধারণ ‘রাজনৈতিক ক্যাডার’ হিসাবেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘বিজেপিকে হারাতে হলে সবাইকে এক হতে হবে। আমি লিডার হতে আসিনি, আমি ক্যাডার।’ তিনি পেগাসাস ম্যালওয়্যার নিয়ে মোদির নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

এর আগে বুধবার সকালে তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির ডাকা বৈঠকেও সভাপতি হিসেবে মমতা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠক থেকে বের হয়েও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা। বলেন, ‘আমি জ্যোতিষ নই। যা হবে সময়ই সব বলে দেবে।’

তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে মমতা দিল্লি সফর করছেন। এ সফরের মধ্যে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেও ম্যারাথন বৈঠক করছেন মমতা।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটা এখনও অনিশ্চিত। কারণ রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশ করতে হলে দুইটা টিকা থাকা বাধ্যতামূলক। মমতা একটি ডোজও নিয়েছেন কিনা; সেটা এখনো জানা যায়নি।

এসএইচ-৩১/২৮/২১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)