সমকামী বিয়ের পক্ষে সুইজারল্যান্ডের মানুষ

গণভোটে সমকামী বিয়েকে সমর্থন জানালেন সুইজারল্যান্ডের মানুষ। সমকামী যুগল এবার শিশু দত্তকও নিতে পারবে।

দীর্ঘদিনের লড়াই শেষ। সুইজারল্যান্ডে সমকামী বিয়ের পক্ষে রায় দিলেন সাধারণ মানুষ। রোববার গণভোটের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে ৬৪ শতাংশ মানুষ সমকামী বিয়ের পক্ষে রায় দিয়েছেন। মাত্র ৩৬ শতাংশ মানুষ বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।

গণভোটের ফল ঘোষণার পরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের কর্মীরা। দ্রুত সমকামী বিয়ের বিলটি এবার আইনে পরিণত হবে বলে মনে করছেন তারা।

বিশ্বে সর্বপ্রথম সমকামী বিয়ে বৈধ হয় এই দেশে। ২০০০ সালে বৈধতা পাওয়ার পর ২০০১ সালে সমকামী বিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দেশটিতে।

কিছুদিন আগে সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে সমকামী বিয়ের বিলটি পেশ হয়। সেখানে বিলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল সরকারপক্ষ। কিন্তু বিরোধীরা গণভোটের দাবি তোলে। সুজারল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিষয়ে যদি পঞ্চাশ হাজার মানুষের সই সংগ্রহ করা যায়, তাহলে বিল পাস হলেও ওই বিষয়ের ওপর গণভোটের আয়োজন করা যেতে পারে।

এক্ষেত্রে ঠিক সে ঘটনাই ঘটেছিল। দেশের অতি দক্ষিণপন্থি দলের আহ্বানে পঞ্চাশ হাজার মানুষের সই জমা পরে পার্লামেন্টে। তারপরেই রোববার গণভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে সমকামী বিয়ের পক্ষে রায় দেন সাধারণ মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরেই সুইজারল্যান্ড সমকামী অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। ১৯৪২ সালে অ্যালপাইন রাষ্ট্রটিতে সমকামী সম্পর্ককে বৈধতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ সমকামী হলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে না। যদিও বাস্তবে পুলিশ সমকামীদের একটি তালিকা বানিয়ে রাখত।

১৯৯০ সালে সেই তালিকা তৈরি বন্ধ করা হয়। সমকামীদের একসঙ্গে থাকার আইনি সুযোগও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সুযোগ বিয়ের মতো ছিল না। বিয়ে করলে স্বামী-স্ত্রী যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে, সমকামী যুগল এতদিন তা থেকে বঞ্চিত ছিল।

গত ডিসেম্বরে সুইস পার্লামেন্ট যে বিল আনে, তাতে সমকামী যুগলকেও বিয়ের অধিকার দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু বাদ সাধে অতি দক্ষিণপন্থি দল। এবার আর সমকামী যুগলের বিয়ের অধিকার পেতে অসুবিধা থাকল না।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এবার থেকে সমকামী যুগলও শিশু দত্তক নিতে পারবে। কিছুদিনের মধ্যেই সুইস পার্লামেন্টে বিলটি আইন হিসেবে গ্রহণ করা হবে বলে মনে করছেন এলজিবিটিকিউ কর্মীরা।

এসএইচ-১৯/২৭/২১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)