শাহবাজকে ‘আন্তর্জাতিক ভিক্ষুক’ বলে চিনিয়ে দিলেন এমপি!

পাকিস্তানে যখন রাজনৈতিক উত্থান পতনের ‘মেলা’ বসেছে তখনই দেশটির সংসদের একটি ভিডিও ভাইরাল হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেশটির নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে আন্তর্জাতিক ভিক্ষুক বলে চিনিয়ে দিলেন ইমরান খানের দলের এক এমপি।

পার্লামেন্টের ভেতরে ইমরান খানের পার্টি তেহেরিক-ই-ইনসাফের সাংসদ ফাহিম খান শাহবাজ শরিফকে আন্তর্জাতিক ভিক্ষুক বলে উল্লেখ করেন।

ফাহিম খান নিজেই এই ভিডিওটি করেছেন। ভিডিওটি তিনি সোমবার (১১ এপ্রিল) টুইটারে শেয়ার করেছেন। শাহবাজ শরিফের শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ আগে ধারণ করা এই ভিডিওতে ফাহিম খানকে বলতে শোনা যায়, এখন আমি জাতীয় পরিষদে অবস্থান করছি। আমি আপনাদের এখন একজন আন্তর্জাতিক ভিক্ষুককে দেখাব। এটা বলেই তিনি মুঠোফোনের ক্যামেরা শাহবাজ শরিফের দিকে তাক করান। এরপর আবারও গর্জে ওঠেন তরুণ এই সাংসদ।

তিনি বলেন, এই মানুষটা নিজে একজন ভিক্ষুক এবং তিনি পাকিস্তানকেও ভিক্ষুক ডাকেন। আমরা ভিক্ষুক নই। আমরা স্বাধীন জাতি। যারা এসব বলে তারাই ভিক্ষুক।

দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ১৭৪ ভোটে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ বা পিএমএলএন-এর প্রধান শাহবাজ শরিফ। ৩৪২ আসনের পরিষদে প্রধানমন্ত্রী হতে দরকার ছিল ১৭২টি ভোট। নানা নাটকীয়তার পর ইমরান খানকে হটিয়ে বিরোধী শিবির এখন ক্ষমতার মসনদে।

৭০ বছর বয়সী শাহবাজের জন্ম লাহোরে। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৯৭ সালে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে কারারুদ্ধ ও ২০০০ সালে সৌদি আরবে নির্বাসিত হন তিনি।

এরপর ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফিরে আসেন শাহবাজ শরিফ। পরের বছর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ফের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন। তৃতীয় মেয়াদে ২০১৩ সালেও তিনি প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

শাহবাজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা মুসলিম লীগের নায়ক নওয়াজ শরিফের ভাই। ভাই নওয়াজ দেশ ছাড়ার পরে পাকিস্তান মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন তিনি। তখন থেকেই ভাতিজি মরিয়াম শরিফকে নিয়ে দল চালাচ্ছেন। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য হন।

দেশটির সাধারণ মানুষ মনে করছেন, অর্থনীতি ঢেলে সাজাতে ও বেকারত্ব দূর করতে ইমরান খান যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, নতুন সরকার তা বন্ধ করে দিলে সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে পাকিস্তান। সেক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা কমে যাবে নতুন সরকারের। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে আবারও হয়তো ক্ষমতায় আসতে পারেন ইমরান খান।

এসএইচ-০৭/১৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)