করোনায় বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়া; ভারতেও বাড়ছে শনাক্ত

করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটিতে একদিনে আড়াই লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, সংক্রমণের আসল সংখ্যা প্রকাশ করছে না কিম প্রশাসন। এমনকি মৃতের সংখ্যা গোপন করারও অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, তখন সংক্রমণের লাগাম টানতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আক্রান্তের হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কম থাকলেও হঠাৎ করেই গেল সপ্তাহ থেকে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে রোগীর সংখ্যা। একদিনেই দেশটিতে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আড়াই লাখের বেশি, আর মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। করোনার নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে চিকিৎসাধীন প্রায় ৬ লাখ মানুষ।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশব্যাপী লকডাউনে কড়াকড়ি শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া। পণ্য উৎপাদন থেকে পণ্য পরিবহন সব কিছু আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে উত্তর কোরিয়ার উদাসীনতা রয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার টিকা দেওয়া হয়নি। এমনকি করোনা পরীক্ষাতেও জোর দেওয়া হয়নি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর দাবি, উত্তর কোরিয়ার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দেশটি। এখনো অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতেও ব্যর্থ হয়েছে কিম প্রশাসন। দেশটির সার্বিক করোনা পরিস্থিত নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (২১ মে) এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, পিয়ংইয়ংয়ের করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত বাইডেন প্রশাসন।

গত ১২ মে প্রথমবারের মতো করোনা রোগী শনাক্তের খবর জানায় উত্তর কোরিয়ার সরকার। করোনার বিস্তার রোধে দেশজুড়ে লকডাউনের আদেশ দিয়েছেন শীর্ষ নেতা কিম জং উন। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘মহাবিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেছেন কিম জং উন। করোনার লাগাম টানতে দেশটিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া করোনা সংক্রমণের তথ্য দিলেও সংক্রমণের প্রকৃত কারণ ঘোষণা করেনি। ভাইরাস মোকাবিলায় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে দেশটির সীমান্ত কঠোরভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দেশটি বিশ্ব থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি করোনার হুমকির কথা উল্লেখ করে টোকিও ও বেইজিং অলিম্পিকে দল পাঠানোর আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করে তারা।

এদিকে ভারতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। একদিনে দেশটিতে রোগী শনাক্ত হয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি। এ সময় মারা যান অন্তত ২৫ জন। এখন পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখের বেশি মানুষ।

এদিকে চীনের সাংহাই শহরের করোনা আক্রান্তের হার অপরিবর্তিত থাকায় সেখানে লকডাউন শিথিলের কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, এপ্রিলের শুরুতে জারি করা কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দেওয়ায় প্রাথমিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

অন্যদিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এ সময় পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে স্কুল-কলেজ, রেস্তোরাঁ ও অফিস-আদালত। শুক্রবার ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় বেইজিংয়ের একটি আবাসিক এলাকার ১৩ হাজার মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।

এসএইচ-১৯/২১/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)