ইউক্রেনে রাশিয়ার এক হামলায় নিহত ৮৭

ইউক্রেনের দেসনা শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায় ৮৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত মঙ্গলবার এ হামলা চালানো হয় বলে জানান তিনি।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় একক হামলা, যাতে একসঙ্গে এত মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

হামলার দিন রাশিয়ার এক সামরিক মুখপাত্র বলেন, চেরনিহিভ অঞ্চলের দেসনা শহরের কাছে ইউক্রেনের সামরিক প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে আমাদের ‘উচ্চ-নির্ভুল’ ও দূরপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

হতাহতের খবর জানালেও হামলায় নিহতরা সামরিক নাকি বেসামরিক ব্যক্তি, তা উল্লেখ করেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তবে দেসনা শহরের কাছে একটি সামরিক ব্যারাক এবং প্রশিক্ষণ ঘাঁটি রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এর আগে গেল মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনে ৩০০টির মতো বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। সেসময় সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান হামলা বাড়ালেও ইউক্রেনের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে মস্কো।

নাম প্রকাশ না করে মার্কিন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানান, বেশির ভাগ সামরিক বিমান আকাশ থেকে স্থলে হামলা চালাচ্ছে, মূলত স্থির লক্ষ্যবস্তুতে। এ ছাড়া রাশিয়ান বিমানগুলো ইউক্রেনের আকাশসীমায় খুব বেশি সময় অবস্থান করছে না। আর রাশিয়ার যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে নিজেদের স্বল্প ও দূরপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার এবং ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এদিকে উত্তর কৃষ্ণ সাগরেও নৌ তৎপরতা বাড়িয়েছে রুশ সেনারা।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, ইউক্রেনে হামলা শুরুর প্রথম থেকেই রাশিয়ার প্রধান উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি কিয়েভের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ অর্জন করা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মস্কোর ক্রমাগত ব্যর্থতা তাদের সামরিক অভিযানের অগ্রগতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে স্থবির করে দিয়েছে।

ইউক্রেনের সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসে দেশটির সীমান্তে সামরিক সমাবেশ করে রাশিয়া। লক্ষাধিক সেনা, বিশাল ট্যাংক ও আর্টিলারি বহরের পাশাপাশি যুদ্ধবিমান ও সামরিক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়।

রাশিয়ার এই সামরিক প্রস্তুতি দেখে মনে করা হয়েছিল, একদিকে স্থলপথে দ্রুত অভিযান চালাবে রুশ স্থলবাহিনী। অন্যদিকে যুদ্ধবিমানের বিশাল বহর নিয়ে দ্রুত বেগে ইউক্রেনের আকাশপথের নিয়ন্ত্রণ নেবে রুশ বিমানবাহিনী। সেই লক্ষ্যেই শুরু হয় সামরিক অভিযান। কিন্তু ইউক্রেনের ১৩২টি যুদ্ধবিমান ও মাত্র ৫৫টি সামরিক হেলিকপ্টারের বিপরীতে ১ হাজার ৩৯১টি যুদ্ধবিমান ও ৯৪৮টি হেলিকপ্টার নিয়েও ইউক্রেনের আকাশপথ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি রাশিয়া।

সংখ্যা ও সক্ষমতার দিক থেকে রাশিয়ার বিমান বাহিনীর তুলনায় নগণ্য হওয়ার পরও ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিমানগুলোই এখনো আকাশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এমনকি তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও সক্রিয় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করছেন। বিষয়টিকে রাশিয়ার বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা।

এসএইচ-২৫/২৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)