কানাডায় সোওনা-বাথ থেকে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্স

মন্ট্রিলের স্থানীয় একটি সোওনা-বাথ থেকে কানাডাজুড়ে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। সোওনা-বাথ এক ধরনের গোসলখানা, যেখানে একসঙ্গে অনেকেই গোসল করে। ইউরোপ ও আমেরিকায় এ সোওনা বাথের ব্যবহার দেখা যায়। কানাডায় মাঙ্কিপক্স রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত একাধিক চিকিৎসক বলছেন, মন্ট্রিলের একটি সোওনা-বাথ থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে কানাডায় মাঙ্কিপক্স প্রথম দুইজনের শরীরে শনাক্ত করেন কুইবেক প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এরপর থেকে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দেশটির পাবলিক হেলথ এজেন্সি (পিএইচএসি) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬ জন শনাক্ত করা গেছে। এদের সবাই কুইবেক প্রদেশের বাসিন্দা।

পিএইচএসি এক বিবৃতিতে বলেছে, একাধিক জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে টেস্ট করার জন্য। মন্ট্রিলের একজন সরকারি চিকিৎসক রবার্ট পিলারস্কি। গত সপ্তাহে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত এক রোগীকে চিকিৎসা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার গ্লোবাল নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে এ চিকিৎসক বলেন, তার ওই রোগী সম্প্রতি জি আই জো নামে স্থানীয় একটি সোওনা-বাথে গোসল করতে গিয়েছিলেন। সম্ভবত সেখান থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।

পিলারস্কির কথায়, ‘ওই জি আই জো সোওনা-বাথকেই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্লোবাল নিউজকে আরেক চিকিৎসক ওই মন্ট্রিলের ওই সোওনা বাথকেই মাঙ্কিপক্সের উৎস বলে চিহ্নিত করেছেন।

মাঙ্কিপক্স হচ্ছে একটি সিলভাটিক জুনোসিস ভাইরাস, যা মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। রোগটি সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার বনাঞ্চলে দেখা যায়।

সোজা ভাষায় বললে, মাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাস রোগ। যা সাধারণত মারাত্মক নয়। এর উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, পেশীতে ব্যথা, মাথাব্যথা, লিম্ফ নোড ফোলা, ক্লান্তি ও ত্বকে ফুঁসকুড়ি। ভাইরাসটি সংক্রমিত ব্যক্তির ত্বকের ক্ষত বা ক্ষত থেকে বের হওয়া রসের সংস্পর্শ থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

মহামারি করোনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক হয়ে এবার সামনে এসেছে মাঙ্কিপক্স। বিরল এ রোগটি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী প্রথম পাওয়া যায় যুক্তরাজ্যে। এরপর ইউরোপের স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনেও এ রোগে আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত ১৮টি দেশে ছড়িয়েছে বিরল এই ভাইরাসটি।

সবশেষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তি সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকা সফর করেন। তিনি এখন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। আমিরাত কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দমনে প্রস্তুত। এজন্য নজরদারি বাড়ানো ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এসএইচ-১৪/২৭/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)