পুতিনের ঘোষণার পর দেশ ছেড়েছে ২ লাখ রুশ

ইউক্রেনে রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণার পর রাশিয়ার অন্তত ২ লাখ নাগরিক দেশ ছেড়েছে। তারা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনে নতুন করে সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে দেশের রিজার্ভ সেনাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি। তার এ নির্দেশ অনুসারে রিজার্ভ সেনা থেকে প্রায় ৩ লাখ সেনা মোতায়েন করা হবে।

এ ঘোষণার পরপরই রুশদের দেশ ছাড়ার হিড়িক শুরু হয়। মঙ্গোলিয়া, কাজাখস্তান, জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ড সীমান্তে রীতিমতো ভিড় লেগে যায়। দেখা যায় ব্যক্তিগত গাড়ির দীর্ঘ সারি। পুতিনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি শহরে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশও হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘আংশিক সংহতি’ ঘোষণার পর গত সাত দিনে প্রচুর লোক রাশিয়া ছেড়েছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা জানাতে পারেনি মন্ত্রণালয়। তবে বলেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযানে অংশ নেয়া সেনা সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্ট্রেইট টাইমস বলছে, রাশিয়ার সঙ্গে ১৪ দেশের সীমানা রয়েছে। তবে সব দেশ এ বিষয়ে তথ্য না দেয়ায় দেশত্যাগী রুশদের প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। কাজাখস্তান সরকার জানায়, গত সপ্তাহে দেশটিতে ৯৮ হাজার রাশিয়ান নাগরিক প্রবেশ করেছে। জর্জিয়ার সরকার জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ রাশিয়া থেকে এসেছে।

প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার মানুষ রাশিয়া ছাড়ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ রাশিয়ার বাইরে যেত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বর্ডার এজেন্সি ফ্রন্টটেক্স এক বার্তায় জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬৬ হাজার রাশিয়ার নাগরিক জোটভুক্ত দেশগুলোয় এসেছে। এ সংখ্যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি।

এদিকে গণভোটের পর রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করার প্রস্তুতি শুরু করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) একীভূত করার ঘোষণা দিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেই লক্ষ্যে রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ারে বিশাল পর্দার একাধিক বিলবোর্ড সংবলিত মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে।

গত ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিজিয়া ও খেরসনে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। গণভোটে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে জনগণ ‘বিপুল রায়’ দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওই চার অঞ্চলের মস্কোপন্থি নেতারা।

এসএইচ-২২/২৯/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)