নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতে ইমরান

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) ‘অযোগ্য’ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। শনিবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এ বিষয়ে একটি আবেদন দাখিল করেন তিনি। খবর ডন।

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে সরকারি তোশাখানার উপহার সামগ্রী বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত আয়ের বিশদ বিবরণ প্রকাশ না করার অভিযোগে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের করা মামলায় শুক্রবার ইমরান খানকে রাজনীতিতে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। এ ছাড়া তাকে সাংসদ পদ থেকেও খারিজ করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খানের দল পিটিআই। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে শিগগিরই আপিল করবে তারা। একই সঙ্গে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়।

দলের শীর্ষ নেতাদের আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বানের পানির মতো রাজপথে নেমে আসে পিটিআইয়ের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ইসলামাবাদ, করাচি, পেশোয়ার ও লাহোরসহ সব বড় শহর। পরদিন শনিবার কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করেন ইমরান খান।

তাতে নির্বাচনে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা বাতিলের জন্য আবেদন করেন ‘ক্যাপ্টেন’ ইমরান। আগামী ২৪ অক্টোবর (সোমবার) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহর বেঞ্চে এই আবেদন উত্থাপন করা হবে।

পাকিস্তানে তোশাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বিভাগ। সরকার ও অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধান ও বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শাসক, সংসদ সদস্য, আমলা ও কর্মকর্তাদের যেসব উপহারসামগ্রী দেন, সেগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব দফতরের ওপর।

তোশাখানার নিয়ম অনুসারে, বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেয়া উপহার ও অন্যান্য উপকরণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে। ২০১৮ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ইমরানকে দেয়া উপহারের বিবরণ প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ছিল পিটিআই সরকার।

তাদের যুক্তি ছিল, এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলবে। তবে গত ৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া লিখিত জবাবে ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার প্রাপ্ত কমপক্ষে চারটি উপহার বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার জবাবের সপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ২ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার রুপি দাম দিয়ে উপহারগুলো সংগ্রহ করেছিলেন। তবে এগুলো বিক্রি করে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ রুপি পান তিনি। উপহারগুলোর মধ্যে ছিল একটি গ্রাফ হাতঘড়ি, এক জোড়া কাফ লিংক, একটি দামি কলম, একটি আংটি ও চারটি রোলেক্স ঘড়ি।

এসএইচ-১১/২২/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)