অপহরণের পর টর্চারসেলে চালানো হতো নির্যাতন!

রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার একটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আল মামুন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার জোয়াদুল আহাদ খানের ছেলে আরেফিন আহাদ খাঁন সানি (৪২), আজাদ আলীর ছেলে মোস্তাক আহম্মেদ ফাহিম (২২), নুরুজ্জামানের ছেলে পারভেজ (২৭), আলম সরকারের ছেলে সাব্বির সরকার (২৫)।

পুলিশ জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে আরেফিন আহাদ খাঁন সানির বাড়ি হেতেমখাঁয় আটকে রাখা হয়। তাকে অপহরণ করতে সহযোগিতা করে সানির বন্ধু মোস্তাক আহম্মেদ ফাহিম। অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকার জন্য তাদের টর্চারসেলে দেলোয়ার হোসেনের উপর নির্যাতন চালানো হয়। এরপর বিভিন্নভাবে অস্ত্রের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ২০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। দেলোয়ারের মোবাইল ফোন থেকে তার আত্মীয়দের অপহরণের বিষয়টি জানো হয়। উপায় না পেয়ে মুক্তিপণ হিসাবে দেলোয়ার তাদের ৫০ হাজার টাকা দেয়। পরে তাকে বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

ছাড়া পেয়ে দেলোয়ার হোসেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ভোর রাত ৪টা দিকে নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে একটি দল ও সিআরটি এবং বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে সাথে নিয়ে হেতেমখাঁ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। আভিযানে গ্রেপ্তার হয় ওই অপহরণ চক্রের চার সদস্য। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র।

পুলিশ জানায়, সানির বাড়ির ছাদের টর্চারসেল হতে বিপুল পরিমানে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত তারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করতো। অপহরণের পর সনির বাড়িতে নিয়ে তাদের তৈরি করা টর্চারসেলে মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। পরে অপহরণ করা ব্যক্তির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনদের নিকট থেকে নগদ, বিভিন্ন ব্যাংকিং অ্যাপস এর মাধ্যমে মুক্তিপণের চাঁদা হিসেবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। তারা একটি সংঘবদ্ধ অহপরণ চক্রের সক্রিয় সদস্য বলেও জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অপহরণ ও অস্ত্র আইনে মামলা দেয়া হয়েছে।

এআর-০১/২৫/০২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)