স্বাস্থ্যচর্চার বাইরে রূপচর্চারও অনবদ্য উপকরণ গ্রিন টি, রইল ব্যবহারের টিপস

স্বাস্থ্যচর্চার বাইরে

চায়ের সঙ্গে ভারতীয় তথা এদেশের আবহাওয়ার অটুট বন্ধন। চা দিয়ে আমাদের দিনের শুরু তো হয়ই, এমন বহু মানুষ রয়েছে, যাদের চা দিয়ে দিনের শেষও হয়। অর্থাৎ এক কাপ চা খেয়ে ঘুমোতেও যায়। এই চা আবার আমাদের ত্বক, চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভীষণ ফলদায়ী। আজকে সেই চা-চর্চা।

– কালো চায়ের লিকার শুধু স্বাস্থ্যকর বা শরীরের জন্য উপকারী এমন নয়, এটা ত্বকের জন্য খুব কার্যকরী।

– চা—পাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-এজিং, অ্যান্টি—ইনফ্ল্যামেটরি প্রপার্টি। চা পাতা ত্বককে উজ্জ্বল, সতেজ, ঝকঝকে করে তোলে। গ্রিন টি ও ব্ল্যাক টি—তে রয়েছে ক্যাফেইন, ক্যাটেচিন এবং পলিফেনল নামক দু’ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দ্রুত বয়স বৃদ্ধিকে রোধ করে, অ্যাকনে দূর করে।

–চা খুব ভাল টোনারের কাজ করে। স্কিনকে সুদিং এফেক্ট দেয়, ঠান্ডা করে।

– চায়ে থাকা ক্যাফেইন ত্বকের নিম্নভাগের ব্লাড ভেসেলগুলো সংকুচিত করে রাখে। চোখের চারপাশে ডার্ক সার্কল বসতে দেয় না।

–পাফি আইজ যাঁদের, ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা টি ব্যাগ চোখের ওপর রাখলে বা চা লিকার হওয়ার পাতা পুঁটলি করে চোখে দিলে পাফিনেস কমে।

– চায়ে থাকে ট্যানিক অ্যাসিড যা সানবার্ন প্রতিরোধ করে। ব্লেমিশ কমাতে সাহায্য করে।

– চা-পাতা জলে দিয়ে হালকা লিকার করে নিন। লিকার ঠান্ডা হলে তুলো বা নরম কাপড় ভিজিয়ে ত্বকের অ্যাফেক্টেড এরিয়াতে রাখুন ৩০ মিনিট। টি ব্যাগ সরাসরি অ্যাপ্লাই করলে মুখে লালচে ভাব, র‌্যাশ চলে যাবে।

– ভেজা টি ব্যাগ সরাসরি মুখে থুপে থুপে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট পর টাওয়েল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।

– ব্যবহার করা টি ব্যাগ নিয়ে শুকিয়ে নিন। এবার ব্যাগটা কেটে ওই চা—পাতা দিয়ে মুখে স্ক্রাব করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এক্ষেত্রে দুধ চায়ে ব্যবহৃত টি ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না।

– জ্যাসমিন টি খুব কার্যকরী ত্বকের জন্য। এতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রো রিয়েল প্রপার্টি, যা ত্বকের বাড়তি তেলাভাব শোষণ করে নেয়। জ্যাসমিন টি হালকা লিকার করে ঠান্ডা করে নিন। অ্যাকনে প্রোন অয়েলি স্কিনে লাগান। ব্রণ হয়ে যে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হয়, তা প্রতিরোধ করে এই চা। সঙ্গে ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্সের মাত্রাও ঠিক রাখে।

– ত্বকে অতিরিক্ত ইরিটেশন হলে চা পাতা লিকার অল্প তুলোয় নিয়ে পরিষ্কার স্কিনে অ্যাপ্লাই করুন। এতে র‌্যাশ কমবে, ফ্লেকি স্কিনের সমস্যা কম হবে।

– হোয়াইট টি—তে রয়েছে আরও অনেক বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুষ্টিগুণ। হোয়াইট টি হালকা ফুটিয়ে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট করুন। তৈরি মাস্ক মুখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের গ্লো ও ফ্রেশনেস ফিরিয়ে আনতে জুড়ি মেলা ভার এই মাস্কের।

– গ্রিন টি ফাটা ঠোঁটের জন্য দারুণ উপযোগী। গ্রিন টি ব্যাগ উষ্ণ জলে ভিজিয়ে নিন এবং ওই জল ঠোঁটে লাগান। ঠোঁটের পোড়া বা জ্বালাভাব কমাবে। ঠোঁট হাইড্রেট করবে।

– ব্ল্যাক টি খুব ভাল হেয়ার ক্লেনজার। চায়ের লিকার ঠান্ডা করে ছেঁকে শ্যাম্পুর পর চুলে ও স্ক্যাল্‌পে ঢালুন। চুল চকচক করবে।

– গ্রিন টি প্রি—ম্যাচিওর এজিং প্রতিরোধ করে। গ্রিন টি—তে রয়েছে ভিটামিন বি ও এ, যা ত্বকের স্বাস্থে্যর জন্য খুব জরুরি। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ঠিক রাখে।

– ৪ চামচ গ্রিন টি, ২ চামচ বেদানার রস, ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল ও আধ চা চামচ কর্নস্টার্চ মিশিয়ে মাইক্রো করুন ১ মিনিট। ঠান্ডা করুন। রেখে দিন। রাতে শোয়ার আগে মুখে দিন। দারুণ অ্যান্টি—এজিং—এর কাজ করবে।

– মাচা গ্রিন টি, অল্প জল আর ২—৪ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে বোতলে রেখে দিন। খুব ভাল টোনার এটি।

– মাচা টি এই মুহূর্তে খুব পপুলার একটি গ্রিন টি। এর মধে্য রয়েছে উচ্চমানের ক্লোরোফিল ও শক্তিশালী ডি—টক্সিফায়ার, যা শরীরকে টক্সিনমুক্ত করে। ফ্রি র‌্যাডিকল্‌সের সঙ্গে লড়াই করে। ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলির ক্ষতি রোধ করে। মাচা গ্রিন টি অ্যাকনে প্রতিরোধে কার্যকরী। ত্বকে অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরণ প্রতিরোধ করে।

প্রি ম্যাচিওর গ্রে হেয়ার বা বয়সের আগেই চুল পেকে যাওয়া প্রতিরোধ করে।

– এই চায়ের অ্যান্টি—ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি—ভাইরাল প্রপার্টি ত্বকে ব্রণর প্রকোপ রোধ করে।

– সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব কম করে।

– ১ চা চামচ মাচা গ্রিন টি, ২ চা চামচ মধু ও ৩ ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

– মাচা গ্রিন টি আর বেকিং সোডা সমপরিমাণে নিয়ে মিশিয়ে স্ক্রাবিং করুন ২ মিনিট। ধুয়ে ফেলুন। দেখুন কেমন ঝকঝকে, পেলব ত্বক পেয়ে যাবেন।

আরএম-১৫/২১/০৪ (লাইফস্টাইল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন)