শীতে রোদ পোহানোই ডেকে আনে মারাত্মক বিপদ

শীতে রোদ

শীতের তীব্রতায় হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। তাইতো একটু আরামের আশায় রোদে এসে একটু উত্তাপ নেয়ার চেষ্টা করেন সবাই। শরীরের জন্য শীতের রোদ বেশ আরামদায়ক।

তবে ত্বকের জন্য ঠিক ততটাই ক্ষতিকর। কারণ বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতের রোদে ক্ষতিকর প্রভাব বেশি থাকে। রোদের প্রখরতা কম থাকায় শীতের রোদে সবাই একটু বেশি সময় কাটায়। ফলে শীতের রোদে ত্বকের ক্ষতিও বেশি হয়।

শুধু সকালেই নয়, শীতের সময় দুপুর কিংবা বিকেলেও অনেকে গায়ে রোদ মেখে আরাম পান। আর তাই শীতে কেউই রোদ এড়িয়ে চলতে চান না। শীতের মিষ্টি রোদ থেকে উষ্ণতা আহরণের আকাক্ষা থাকে সবারই।

তবে এখানেই লুকিয়ে বিপদ। অতিরিক্ত সময় রোদে থাকলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। বাড়ে স্কিন ক্যানসারের সম্ভাবনা। আসলে শীতকালে পৃথিবীর বাইরে থাকা ওজন লেয়ার পাতলা হয়ে যায়। অতিবেগুনি রশ্মি অনেক বেশি করে গায়ে লাগে। তার উপর শীতকালে ত্বকে মেলানিন উৎপাদন কমে যায়। ফলে, অতিবেগুনি রশ্মির রেডিয়েশন অনেক বেশি করে পড়ে ত্বকের উপর। এমনটাই জানালেন ভারতের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায়।

তার পর্যবেক্ষণ, শীতকালে বেশিক্ষণ রোদে থাকলে ত্বক স্বাভাবিক রঙ হারায়, বলিরেখা পড়ে, পুরু হয়ে যায়। সামান্য আঘাতে কালশিটে দাগ পড়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে স্কিন ক্যানসারও হয়।

এ তো গেল ত্বকের ক্ষতি। হার্টের বা রক্তচাপের রোগীদের দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকা প্রাণঘাতী হতে পারে। ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা হলে কিংবা গায়ে জ্বর থাকলে রোদ পোহানো যাবে না।

সূর্যস্নান করার সময় অবশ্যই মাথায় ভিজা তোয়ালে বা গামছা রাখা উচিত। তবে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের বেশি ‘সানবাথ’ নয়।

মানতে হবে আরো কিছু নিয়ম। যেমন ভরা পেটে সূর্যস্নান নয়। ঘণ্টা দু’য়েক আগে খাওয়া সেরে নিতে হবে। এমনটাই জানালেন নেচারোপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ডা. অমরেন্দ্রনাথ দাস।

তার মতে, সূর্যস্নানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। পরিমিত রোদ গায়ে লাগালে শরীর সতেজ থাকে। চনমনে হয় মন। কর্মক্ষমতা বাড়ে। বাড়ে রক্তসঞ্চালন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ভাল-খারাপ নিয়েই শীতের রোদ্দুর। বিদেশে স্কিন ক্যানসারের জন্য ‘রোদ পোহানো’ অনেকাংশেই দায়ী। চামড়া ট্যান করার নেশায় বিদেশিরা দীর্ঘক্ষণ স্বল্প পোশাকে রৌদ্রস্নান করেন। বাংলাদেশে অবশ্য স্কিন ক্যানসারের রোগী হাতেগোনা। তবু সাবধানের মার নেই। দীর্ঘক্ষণ টানা রোদে না বসাই ভালো।

ত্বক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, শীতের সময় বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় অতিবেগুনি রশ্মি সহজেই ত্বকের সংস্পর্শে পৌঁছে যায়। জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বছরের অন্য সময় আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির তেজ অনেকটা কমে যায়। শীতে সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শে আসে। ত্বকের ক্ষতিও বেশি হয়। তাই পৌষ-মাঘের রোদ বিপজ্জনক। ত্বকের সজীবতা ও হালকা বর্ণ ধরে রাখার জন্য শীতের সময় টানা রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো।

আরএম-১১/২৬/১২ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)