চশমা চোখেই হয়ে উঠুন গ্ল্যামারকুইন!

চশমা চোখেই

আজকাল কম বেশি সবার চোখেই চশমা দেখা যায়। প্রয়োজন বা ফ্যাশন যে কারণেই হোক চশমা ছাড়া উপায় নেই। তবে যারা প্রয়োজনে চশমা পরেন তাদের জন্য হয় বিপদ!

বিয়ে, ক্রিসমাস, নিউ ইয়ার পার্টি আরো কত অনুষ্ঠানে এই চশমার কারণে নিজের আসল সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয় না। চশমার জন্য মনের মতো সাজগোজও করা যায় না। তবে এমন কিছু মেকআপ টিপস আছে যা অনুসরণ করলে চশমা পরেও নিজেকে সুন্দর ভাবে মেলে ধরা যাবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই টিপসগুলো-

বেস মেকআপ

প্রথমেই স্কিনটিকে মেকআপের জন্য তৈরি করে নিতে হবে। আর তার জন্য ভালো করে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন। এরপর প্রাইমার ব্যবহার করে নিন। যাতে তা ভালো ভাবে ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়। প্রাইমার মেকআপ সুন্দর ভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করে, ফলে ত্বক তেলতেলে হয়না। এই কারণে চশমার রিম বারবার স্লিপ হয়ে নিচে নেমে আসে না।

ফাউন্ডেশন ও ব্লাশ

এরপরের স্টেপ হিসাবে ব্যবহার করে নিন আপনার স্কিন টোনের সঙ্গে মানানসই ফাউন্ডেশন। তারপর খুব ভালো করে বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে মিশিয়ে নিন। অয়েল বেস ফাউন্ডেশন লাগাবেন না। এটি স্কিন তেলতেলে করে দেয় ফলে চশমা পিছলে নেমে আসে। চেষ্টা করুন ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার। চাইলে ম্যাটের বদলে ওয়াটার রেজিস্টান্ট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। হালকা পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশনের উপরে ভালো ভাবে ডাস্টিং করে নিন। মুখে ন্যাচারাল ও ম্যাট ব্লাশ ব্যবহার করলে বেশি স্মার্ট লুক পাওয়া যাবে।

কনসিলার

মেকআপের সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল কনসিলার। এমনিতে চশমা পরলে চোখের নিচে একটা ছায়া পড়ে, কিন্তু কেউ যদি মোটা ফ্রেমের চশমা পরেন তাহলে চোখের নিচের ছায়াভাব আরো গাঢ় হয়। তাই এই আঁধার দূর করতে চোখের নিচে হলুদের যেকোনো শেডের কনসিলার ব্যবহার করুন।

চোখের মেকআপ

চোখে থাকুক বিশেষ নজর। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল চোখের মেকআপ। চশমায় ঢাকা পড়ে যাবে বলে চোখের মেকআপে কিন্তু কম গুরুত্ব দেবেন না। বরং অধিক গুরুত্ব দিয়েই চোখের মেকআপ করুন। চোখের জন্য কখনোই অত্যাধিক রঙচঙে আই শ্যাডো ব্যবহার করবেন না। এরজন্য আপনার চশমার ফ্রেমটিই যথেষ্ট। তাই বেজ, বাদামীর কোনো ডার্ক শেড আইশ্যাডো হিসেবে বেছে নিন। আর একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, তা হলো কখনোই গ্লসি বা শিমার আইশ্যাডো ব্যবহার করবেন না। কারণ চশমার সঙ্গে শিমার কখনোই মানানসই হবে না। তাই আইশ্যাডো সর্বদা ম্যাট শেডই ব্যবহার করবেন।

আইশ্যাডোর পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আইলাইনার। আইশ্যাডোর একেবারে ম্যাট হলেও লাইনারের ক্ষেত্রে বেছে নিন কোনো উজ্জ্বল রঙ। যেমন সি গ্রিন বা রয়্যাল ব্লু। এই গাঢ় রঙের আই লাইনার চোখের কোণ থেকে চোখের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রথমে সরু করে টানুন। আপনার চশমার ফ্রেমের আকার যদি সরু হয়, তাহলে সরু করে আই লাইনার পরুন আর যদি তা মোটা হয়, তাহলে মোটা করে আইলাইনার পরলে চোখদুটি দেখাবে উজ্জ্বল।

এমনিতে অনেকেই নকল আইল্যাশ লাগাতে পছন্দ করেন। সেই সঙ্গে চোখের পাতা হাইলাইট করতে অনেকেই মাসকারা ব্যবহার করে থাকেন। চোখের ফলস আইল্যাশ কখনোই ব্যবহার করবেন না। কারণ তা চশমায় লেগে গিয়ে ঘেঁটে যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে আইল্যাশ কার্লার দিয়ে চোখের পাতা কার্ল করে নিতে পারেন।

ভুরু

এরপর সুন্দর করে এঁকে নিন ভুরু। তবে সেক্ষেত্রে আপনার মনে হতেই পারে যে, চশমা পরলে তো ভুরু ঢাকাই পড়ে যাবে, তাই ভুরুর প্রতি আলাদা নজর দেয়ার বিশেষ প্রয়োজন নেই। কিন্তু দেখবেন, চশমা পরলেই আরো বেশি করে ভুরুর দিকে নজর যায়। চশমার ফ্রেম সরু হলে ধনুকের সেপে ভুরু প্লাক করে নিন। মোটা ফ্রেম হলে বেশি সরু করে প্লাক করবেন না। সেপ শার্প দেখাতে আইব্রো পেনসিল দিয়ে হালকা করে ভুরুর উপর বুলিয়ে নিন। বেশি লাগাবেন না বাজে দেখাবে।

ঠোঁটের মেকআপ

সবার শেষ এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ঠোঁট। এমনিকে মেকআপের নিয়ম অনুসারে চোখের মেকআপ গাঢ় হলে ঠোঁটের মেকআপ হবে হালকা। তবে চশমা পরার জন্য চোখে যেহেতু ন্যাচরাল মেকআপ করা হয়েছে, তাই ঠোঁটের জন্য বাছুন গাঢ় কোনো রঙ। যদি খুব সুন্দর করে ক্যারি করতে পারেন তাহলে লাল রঙের লিপস্টিক হল আদর্শ। তবে পোশাকের সঙ্গে রঙ মিলিয়েও লিপস্টিক বেছে নিতে পারেন।

আরএম-১২/২৬/১২ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)