ভ্রমণে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি

ভ্রমণে

কিছু স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত দিয়ে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা তো আর থেমে নেই। কিভাবে ভ্রমণ করবেন? পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ইনস্টিটিউটের ট্রেইনার জাবের আলী।

ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে জানা

যেখানে ভ্রমণে যাচ্ছেন, সেখানকার তথ্য নিতে শুরু করুন। কোন কোন জায়গায় যাবেন, সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো দুর্ঘটনা কিংবা পত্রিকায় এ সম্পর্কে কিছু আছে কি না, তা একবার জেনে নেওয়া ভালো। ভ্রমণে যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার পুলিশের কিংবা পার্শ্ববর্তী থানার ফোন নম্বর সংগ্রহ করুন।

ভ্রমণ স্থানে করোনার পরিস্থিতি

ভ্রমণ স্থানে বর্তমানে করোনার পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নিন। করোনার প্রকোপ বেশি হলে সেই স্থানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন। গুগলের মাধ্যমে অথবা স্থানীয়ভাবে একটু খোঁজ নিয়ে সেখানকার করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নিন। ঘুরতে গেলে পর্যটন স্থানের শর্ত মেনে চলুন।

গন্তব্য স্থানে পরিচিত চিকিৎসক

গন্তব্য স্থানে পরিচিত চিকিৎসক থাকা জরুরি। বন্ধু কিংবা অফিসের সহকর্মীর গন্তব্য স্থানে পরিচিত চিকিৎসক আছে কি না সে বিষয়ে খোঁজখবর নিন। কারণ মহামারিতে হঠাৎ অসুস্থ হলে সেই চিকিৎসক আপনাকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে পারবে।

হাসপাতাল

গন্তব্য স্থানের আশপাশের সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নিন। রিসোর্ট কিংবা হোটেল যেখানেই ওঠেন না কেন, সেখান থেকে হাসপাতাল কত দূর সেই তথ্য জেনে রাখুন। হাসপাতাল ও জরুরি সেবা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নাম্বার নিজের ফোনে সেভ করে রাখুন।

পরিবহন

করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহনও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে ভালো হয় যদি গাড়ি বুক করে নিতে পারেন।

খাবার

ঘুরতে যাওয়ার সময় খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। নিজের কাছে সব সময় কিছু খাবার মজুদ রাখবেন। যেখানে-সেখানে খাবার খাবেন না। পারলে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধও সঙ্গে রাখুন।

সুরক্ষাসামগ্রী রাখুন

করোনার সময় ভ্রমণে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার নিজের কাছে রাখুন। ব্যাগ গোছানোর সময় ভালো করে যাচাই-বাছাই করুন সব কিছু নেওয়া হয়েছে কি না।

আরামদায়ক জুতা

ভ্রমণের জুতা আরামদায়ক হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুতা একেবারে নতুন কিংবা শক্ত হলে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলায় সমস্যা হয়। এমন জুতায় বেশি হাঁটাহাঁটি করলে পায়ে ফোসকা পড়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য জুতা যেন নরম ও আরামদায়ক হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। ছেলেদের জন্য কেডস ভালো। মেয়েরা হিল জুতার বদলে কনভার্স পরতে পারেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত এক জোড়া স্যান্ডেল পলিথিন বা কাগজে মুড়িয়ে লাগেজের এক পাশে রেখে দিন। প্রয়োজনের সময় কাজে লাগবে।

বাড়তি কিছু টাকা নিন

ভ্রমণের বাজেট তো সঙ্গে নেবেনই। এর সঙ্গে কিছু বাড়তি টাকাও আলাদা করে নিন। ভ্রমণে টাকা খুব সাবধানে রাখুন। ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নিতে পারলে ভালো। তবে যেখানে যাচ্ছেন সেখানে বুথ কতটা কার্যকর সেটাও মাথায় রাখুন।

ব্যক্তিগত কথাবার্তা

অনেক সময় একা ঘুরতে ঘুরতে কারো সঙ্গে আপনার পরিচয় হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তার সঙ্গে ব্যক্তিগত কথাবার্তা বুঝে বলুন।

অপরিচিত মানুষের সঙ্গে না যাওয়া

ঘুরতে ঘুরতে আপনি এতটাই আনন্দ পাচ্ছেন, মনে হচ্ছে আরো বেশি নতুন নতুন জায়গায় যেতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু অনেক চক্র আছে আপনাকে অচেনা জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ছিনতাইয়ের জন্য ওত পেতে থাকে। এ জন্য সাবধানে থাকুন। বিশ্বাসযোগ্য সঙ্গি ছাড়া কোথাও ভ্রমণে যাবেন না।

সম্ভব হলে আপনার থানায় জানিয়ে যান

সম্ভব হলে নিজের এলাকার থানার পরিচিত কোনো পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলে রাখুন। নিজেদের থানার মানুষের সঙ্গে পরিচয় না থাকলে বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের কারো মাধ্যমে পরিচিত হোন। অনেক সময় পুলিশের কাছ থেকেও আপনি যেখানে ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন সে জায়গা সম্পর্কে তথ্য পাবেন।

তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ