দায়িত্বশীল হওয়ার উপায়

একজন চমৎকার মানুষের জন্য অনেককিছুই সহজ হয়ে যায়। তবে খুব বেশি ভালো মানুষ হওয়া আর দায়িত্বশীল হওয়া এক জিনিস নয়। কখনো কখনো আপনার কঠোর হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। নয়তো আপনার অধীনস্তরা আপনার ভালো মানুষির সুযোগ নিতে পারে। তাই নিজের দায়িত্বশীলতার প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। এর মানে এই নয় যে আপনি নিজের ভালো স্বভাবগুলো বাদ দিয়ে দেবেন। সেগুলোর পাশাপাশি কীভাবে প্রয়োজনে কঠোর হতে হয় তাও আপনার জানা থাকা জরুরি।

দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি কেন?

কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি। কাজে উন্নতি করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ভদ্র এবং শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। দায়িত্বশীল মানুষকে সবাই সম্মান করে, এটি আপনার মধ্যে নেতৃত্বর গুণাবলি তৈরি করবে, আপনার আত্ম-সম্মানবোধ বাড়াবে এবং দুশ্চিন্তা কমাতে কাজ করবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঝগড়াটে না হয়ে দায়িত্বশীল হওয়া। অন্যকে সম্মান দিলে আপনি খুব সহজেই তাদের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবেন।

দায়িত্বশীল হওয়ার উপায়

যদি আপনার কাজে আরও দায়িত্বশীল হতে চান কিন্তু আপনি জানেন না কোথা থেকে শুরু করবেন, এখানে কিছু সহজ ধাপ আছে যা মেনে বাস্তবায়ন করা সহজ এবং অত্যন্ত কার্যকর-

যা চান তা সরাসরি বলুন

অনেকেই আছেন যারা সরাসরি কথা বলতে ভয় পান। কারণ এই স্বভাবকে আবার অনেকে অভদ্র বলে মনে করেন। যদি আপনিও এমন হন, তাহলে আপনার জন্য এটা বোঝা জরুরি যে ব্যাপারটি এমন নয়। আপনি যদি সামনে এগিয়ে যেতে চান, তাহলে সরাসরি কথা বলা জরুরি। নিজেকে নিয়ে কখনো দ্বিধায় ভুগবেন না। আপনার মতামত সংক্ষিপ্তভাবে বলুন এবং অন্যদের মতামতও গ্রহণ করুন।

উত্তর প্রস্তুত রাখুন

আপনি যখন মানুষকে বলবেন যে আপনি কী চান, তখনই আপনি প্রশ্নের বন্যা দেখবেন। দায়িত্বশীল হওয়ার মানে আগে থেকেই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে আসা। প্রশ্নের উত্তর সংক্ষিপ্ত করুন। সবসময় নিজেকে জিজ্ঞেস করবেন- আপনি কী বলতে চান এবং আপনার শ্রোতারা কি আপনার কথা মন দিয়ে শুনছে? এটি আপনাকে দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

কঠোর হওয়ার চর্চা করা

আপনার কি মনে হয় মানুষ আপনার ওপর নজরদারি করছে? যদি মনে হয়, তাহলে এখনই সময় কঠোর হওয়ার চর্চা করার। এখানে অভদ্র হওয়ার কিছু নেই, কিন্তু অন্যদের বোঝাতে হবে যে আপনি আপনার সীমার বাইরে যেতে ইচ্ছুক নন।

আত্ম-সম্মানবোধ

নিজের ভেতরে আত্ম-সম্মানবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। কিছু অভ্যাস আপনার মধ্যে আত্ম-সম্মানবোধ বাড়বে এবং মনে কোনো নেতিবাচক চিন্তা আসতে দেবে না। নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করা বন্ধ করুন। আপনি কর্মজীবনে কী চান তা নিয়ে ভাবুন। কখনো নিজের কাজের দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ করবেন না। একটু পরিশ্রম করলেই আপনি যা চান তা পেয়ে যেতে পারেন। আপনি যদি মনে করে থাকেন যে আপনার চাওয়া পূরণ হচ্ছে না, তবে সেটা সম্পন্ন করার জন্য সাহস থাকা খুবই দরকার। ধৈর্য ধারণ করুন।

বডি ল্যাঙ্গুয়েজের দিকে খেয়াল দিন

নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের জন্য বডি ল্যাঙ্গুয়েজের দিকে খেয়াল দেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আপনার কথার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করুন। সবসময় কাঁধ এবং পিঠ সোজা রেখে দাঁড়ানো উচিত। এতে আপনার স্বভাবের দৃঢ়তা প্রকাশ পাবে।

অকারণে ক্ষমা চাইবেন না

স্বভাবে দৃঢ়তা থাকার মানে এই না যে আপনিই সবসময় ঠিক হবেন। আপনারও ভুল হতে পারেন। ভুল হলে ক্ষমা চেয়ে নেবেন। কিন্তু আপনার তখনই ক্ষমা চাওয়া উচিত যখন মনে হবে যে আপনি ভুল করেছেন। আপনার ভুল না থাকলে ক্ষমা চাইবেন না। এতে করে আপনি আপনার চাওয়া বোঝাতে পারবেন, হোক সেটা ঘরে বা বাইরে।

চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন

চোখের দিকে না তাকিয়ে কথা বলা ঝগড়া এড়িয়ে চলার একটি সাধারণ উপায়। তবে এতে মানুষ মনে করবে আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে বা নিজের পক্ষে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। স্বাভাবিক ভদ্রতা বজায় রেখে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। তবে অভদ্র আচরণ করবেন না, সেটি আপনার স্বভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

গলার স্বর স্বাভাবিক রেখে কথা বলুন

কথা বলার সময় আপনার গলার স্বর সাবলীল এবং স্পষ্ট রাখুন। সেইসঙ্গে জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। অন্যকে বলতে সুযোগ দিন, এতে করে আপনি তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারবেন।

ভারসাম্য বজায় রাখা

সবশেষে, দায়িত্বশীল হওয়া এবং কঠোর হওয়ার মধ্যে পার্থক্য বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার দৃঢ় হওয়া উচিত, তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি নির্দয় হবেন।

এসএ-১০/১০/০৫(লাইফস্টাইল ডেস্ক)