অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ট্রাইবুনাল যুবলীগের

শেখ হাসিনার ক্ষোভের কথা শুনে সংগঠনের অভিযোগবিদ্ধ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর ছাত্রলীগের দুই শীর্ষনেতা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সরে যেতে হয়েছে।শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগ নেতাদের নিয়েও কথা বলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী রোববার বলেন, “আমাদের একটি ট্রাইব্যুনাল আছে। এখানে কেউ কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়। “অতি শিগগিরই আমরা অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করব। তারপরে বিচারের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের সময় শেখ হাসিনা তাদের ‘শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ’ বলে মন্তব্য করেন বলে বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “  কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগের প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের বিষয়ে আলোচনা হয়।

“প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা তো জন্মদিন পালনের নামে চাঁদাবাজি করতে পারে, এমনভাবে আমার জন্মদিন পালনের দরকার নেই। যুবলীগের কিছু নেতার বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগ আমার কাছে আছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও বেপরোয়া চলাচল বরদাশত করা হবে না।”

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা, “যুবলীগ প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করেন সংগঠনটির সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক।

“বৈঠকের এজেন্ডায় শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের বিষয়টি ছিল। তিনি (নানক) বলেন, দল সাড়ম্বরে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করতে চায়।

“কিন্তু নেত্রী (শেখ হাসিনা) ঘটা করে জন্মদিন পালনে অনীহা দেখালে তিনি (নানক) উদাহরণ হিসেবে যুবলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। তখন আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেন, শনিবার যুবলীগ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা করেছে এবং তিনিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।“

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজির টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে। নিজের জন্য এমন মিলাদ মাহফিল আমি চ

তার ভাষ্য অনুযায়ী, এরপর যুবলীগ নিয়ে তার কাছে আসা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে, যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।”

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বলেন, “ অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে আমরা এই তদন্ত কমিটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।”

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের খবর জানাজানির পর রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যুবলীগের কোনো স্তরের নেতাকর্মীকে সংগঠনটির বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কার্যালয়ের আশপাশে দেখা যায়নি। সকাল থেকেই যুবলীগ কার্যালয়ে দুটি তালা ঝুলছিল।

এসএইচ-০৮/১৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)