নওগাঁয় ১৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নওগাঁয় অংশগ্রহণকারী ১৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত (কাস্টিং ভোট) ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম; অর্থাৎ ১২ দশমিক ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনে ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়।

নওগাঁ ৬টি আসনে ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) আসনে পাঁচজন প্রার্থী সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ছাড়া বাকি তিনজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী বাসদ নেতা মঙ্গল কিস্কু মই প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৮৩, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৭২ এবং জাতীয় পার্টির আকবর আলী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৭৭৩ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে মোট পড়েছে (প্রদত্ত ভোট) ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৬। জামানত বাজেয়াপ্ত না হওয়ার জন্য এ আসনে প্রার্থীদের নূন্যতম ৪৩ হাজার ৯৯ ভোট পাওয়া লাগত।

নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনে নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ছাড়া অন্য তিন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী বদিউজ্জামান লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৭৫৫, জাকের পার্টির প্রার্থী এসজেএ আর ফারুক ভোট পেয়েছেন ৭৫৯ এবং ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন হাতপাখা প্রতীকে ৩ হাজার ৯১৯ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ৮১ হাজার ৬২৩। জামানত বাজেয়াপ্ত না হতে প্রার্থীদের নূন্যতম ৩৫ হাজার ২০২ ভোট প্রয়োজন ছিল।

নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর ও বদলগাছী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ছয় জন। এর মধ্যে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছাড়া অন্য চার প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন লাঙ্গল প্রতীকে নিয়ে ৩২১ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এছাড়া ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী সেকেন্দার আলী হাতপাখা প্রতীকে ৪ হাজার ৪৩০ ভোট, বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী বাসদ নেতা জয়নাল আবেদিন মুকুল মই প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩১৩ ভোট ও বিএনএফের প্রার্থী টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে ৯৪ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ আসনে প্রদত্ত মোট ভোট ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬। জামানত বাজেয়াপ্ত না হতে প্রার্থীদের নূন্যতম ৪১ হাজার ৯২০ ভোট প্রয়োজন ছিল।

নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সংখ্যা সাত জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া অন্য পাঁচ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী সিপিবি নেতা এসএম ফজলুর রহমান কাস্তে প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১ হাজার ৫০৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন সিংহ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৬২ ভোট, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এনামুল হক লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৭৪ ভোট, জাতীয় পার্টি-জেপির প্রার্থী বাইসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৫৯ ভোট পেয়েছেন এবং ইসলামি আন্দোলন প্রার্থী শহিদুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯৭ ভোট। এ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ৬ ভোট। জামানত বাজেয়াপ্ত না হতে প্রার্থীদের নূন্যতম ২৮ হাজার ৫০০ ভোট প্রয়োজন ছিল।

নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে তিনজন প্রার্থী ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা ছাড়া ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাতপাখা নিয়ে ৫ হাজার ৩০৫ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৯ ভোট। জামানত বাজেয়াপ্ত না হতে তার ৩১ হাজার ৭৩ ভোট প্রয়োজন ছিল।

নওগাঁ-৬ (রাণীনগর ও আত্রাই) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা তিনজন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শাহজাহান আলী প্রামাণিক হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৮৪৩ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট। জামানত বাজেয়াপ্ত না হতে প্রার্থীদের নূন্যতম ২৯ হাজার ৯৫০ ভোট প্রয়োজন ছিল।

এসএইচ-৩৬/৩১/১৮ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)