বিদায় ২০১৮ স্বাগত ২০১৯

২০১৮ সালের পুরোনো দুঃখ ভুলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরুর প্রত্যয়ে শুরু হলো ২০১৯ সাল। নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে গোটা বিশ্ব, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা নিষেধাজ্ঞার পরেও বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে বছরের শেষ রাত আর নতুন বছরের প্রথম প্রহর।

প্রতি বছরের মতো এবারও থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, গুলশান, বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা চৌকিসহ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাদে বা উম্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা না গেলেও চার দেয়ালের মাঝে অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

নতুন বছর উপলক্ষে আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে খ্রিষ্টীয় নববর্ষে বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করেছেন। তিনি বলেন, `নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০১৯ সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ বয়ে আনুক।’

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৮ সাল জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত বছর ছিল বাংলাদেশের জন্য সাফল্যময় বছর।’

২০১৯ সাল বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছুটা আলাদা। কারণ ২০১৮ এর একেবারে শেষ দিকে হয়ে গেল দেশটির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের বেসরকারি ফল পাওয়া গেছে ৩১ ডিসেম্বর। অর্থাৎ নতুন বছরের প্রথম মাসেই সরকার গঠন করবে নতুন সরকার।

তাই নতুন বছরে দেশের মানুষের প্রত্যাশা সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা যেন চলমান থাকে। নতুন বছরে বাংলাদেশ নতুন মাইলফলক ছোঁবে এটাও প্রত্যাশা।

শিক্ষা, প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নারীর অধিকার, মানবাধিকার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সুশাসন সব খাতে দেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে নতুন বছরে নিয়ে এমনই আকাঙ্খা সবার। সেই স্বপ্ন পূরণেই নতুন বছরে পা রাখলো বাংলাদেশ।

ইংরেজি বছরের প্রথম দিন আজ

গ্রেট ব্রিটেনে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রচলিত হয় ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে। এই ক্যালেন্ডার আমাদের দেশে নিয়ে আসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের আগে নাম ছিল জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার মিসরে প্রচলিত ক্যালেন্ডারটি রোমে এনে তার কিছুটা সংস্কার করে রোম সাম্রাজ্যে চালু করেন। এই ক্যালেন্ডারে জুলিয়াস সিজারের নামে জুলাই মাসের নামকরণ করা হয়।

মিসরীয়রা বর্ষ গণনা করত ৩৬৫ দিনে। তাদের ক্যালেন্ডার সংস্কার করে জুলিয়াস সিজার যে ক্যালেন্ডার রোমে প্রবর্তন করলেন তাতে বছর হলো ৩০০ সাড়ে পঁয়ষট্টি দিনে। তবে মিসরীয় ক্যালেন্ডার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, এই ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন করা হয় খ্রিস্টপূর্ব ৪২৩৬ অব্দে। ইংরেজি নববর্ষের প্রবর্তন নিয়ে ভিন্ন মতও আছে।

পশ্চিমা বিশ্ব এই দিনকে বিশেষ গুরত্ব দিয়ে পালন করে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা ইংরেজি নববর্ষকে স্মরণ করতে বিশেষ আয়োজনে মেতে ওঠে। রাজধানী ঢাকায় এ উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে দেশের অন্যান্য শহরেও।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ উপলক্ষে রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে বিশেষ আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

এসএইচ-০১/০১/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)