লেবুচাষে কৃষকের ভাগ্য বদল

নওগাঁর বদলগাছীতে দিন দিন লেবুচাষ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অধিক লাভজনক হওয়ায় এই লেবুচাষ করে উপজেলার শতশত কৃষকের ভাগ্যের চাকা বদলে গিয়েছে।

লেবু যেন কৃষকের কাছে একটি স্বপ্নের ফসল। লেবু যেন কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের ফসল। লেবুচাষিদের কাছে লেবু এখন অর্থকরী ফসল হিসেবে পরিচিত। অন্যান্য বছরের তুলনায় লেবু চাষিরা এবার লাভবান হচ্ছে তিনগুণ বেশি।

চলতি মৌসুমে করোনাভাইরাস সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল লেবুর চাহিদা বেড়ে যায় সারাদেশে। মূল্য বেড়ে যাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। একটি লেবু সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে চলতি মৌসুমে। সর্বনিম্ন ৬ থেকে ৭ টাকায় একটি লেবু বিক্রি হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে এই লেবুর দাম কিছুটা ওঠানামা করছে।

জানা যায়, উপজেলায় প্রথমে ২/৪ জন কৃষক লেবুচাষ শুরু করলেও এখন ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। আধাইপুর ইউনিয়নের পারিচা ব্যাসপুর, বৈকুণ্ঠপুর, কার্তিকাহার, পাথরাবাড়ী এলাকায় কৃষকদের এখন প্রধান খেত হচ্ছে এই লেবু চাষ। পারিচা গ্রামের লেবুচাষি এনামুল বলেন, তার নিজস্ব কোন জমি নেই।

অন্যের জমি বর্গা নিয়ে প্রথমে তিনি ১০ কাঠা জমিতে লেবু চাষ শুরু করে প্রায় ৪/৫ বছর পূর্বে। এখন তার কোনো অভাব নেই। একদিনে ৯ টি গাছে গড়ে ৮ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেছে।

১০ কাঠা জমিতে এনামুল ১৫ দিন পরপর ৩ দিন লেবু উত্তোলন করেন। লেবুগুলি বিক্রি করেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। চলতি বছরে তিনি ঐ জমি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন। আরও বিক্রি হবে সারা বছর একই ভাবে।

লেবুচাষি ফিরোজ জানান, সে ৪কাঠা জমিতে লেবু চাষ করে ইতিমধ্যে বিক্রি করেছেন ৭ হাজার ৬শ টাকার। পড়ে আছে এখনো সারাবছর।

লেবুচাষি সুরুজ, আইনুলসহ অনেকেই জানান, লেবুচাষের প্রথম দিকে একশত লেবু বিক্রি হয়েছে ৬ থেকে ৭শ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকায়। এক বিঘা জমিতে লেবু থাকলে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ হাজার লেবু তুলতে হবে। না হলে বাগান নষ্ট হবে। যারা দু চার কাঠা লেবু চাষ করছে সংসারে তাদের কোনো অভাব নেই। যারা আরও বেশি চাষ করছে বদলে যাচ্ছে তাদের ভাগ্যের চাকা। অধিক লাভজনক হওয়ায় লেবু চাষ করে খুশি এলাকার কৃষকরা।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, উপজেলায় মোট আড়াইশো থেকে তিনশো বিঘা জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। লেবুচাষ খুবই লাভজনক ফসল। অন্য ফসল লেবু চাষের মত লাভজনক হবে না।

বিএ-২১/০৯-০৫ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)