দলের ত্রি-বার্ষিক বিশেষ জাতীয় কাউন্সিল শেষ করার এক সপ্তাহ পর নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে গণফোরাম। কমিটিতে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও দীর্ঘকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টুকে সরিয়ে দলে নতুন যোগ দেয়া ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
রবিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দলের এ কমিটি ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল গণফোরাম। এ সময় ড. কামাল হোসেন, রেজা কিবরিয়া, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন কমিটি ঘোষণা করেন গত কমিটি ও নতুন কমিটির নির্বাহী সভাপতি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
গণফোরামের ঘোষিত কমিটি ১১১ সদস্য বিশিষ্ট। কমিটির মেয়াদ এক বছর। গণফোরামের নতুন কমিটিতে নির্বাহী সভাপতি রাখা হয়েছে দুইজনকে। এরা হলেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
সভাপতি পরিষদে আছেন অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মোকাব্বির খান, আ ম সা আমিন, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট শফিক উল্লাহ, মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জানে আলম।
বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে নতুন কমিটির এক নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে, তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।
এছাড়া, ১১১ সদস্যের নতুন কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের পদ খালি রয়েছে।
এ বিষয়ে গণফোরামের দ্বিতীয় নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, পরবর্তী সময়ে এসব সম্পাদকীয় পদ পূরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানে লেখা আছে এদেশের মালিক এই দেশের নাগরিক। আজকে সেই মালিকানা হরণ করা হয়েছে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ গঠন করা হয়নি, তাই জাতিকে এগিয়ে আসতে হচ্ছে তার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা নেই। এদেশের জনগণ এটা কোনো দিন মেনে নেয়নি।
তারা গণতন্ত্রের জন্য আপোসহীন আন্দোলন করেছে। মূলত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের যে আকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত, আমরা তা গড়ে তুলবো। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের মুখ্য ভূমিকা আছে এবং তারা সেই ভূমিকা পালন করবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণকে নিষ্ক্রিয়ভাবে বসে থাকলে চলবে না। তাদেরকে সক্রিয়ভাবে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে হবে। জেলায় জেলায় থানায় থানায় সংগঠিত হয়ে নিজের অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সোচ্চার হয়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে যাব।
তিনি বলেন, জনগণকে আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিতে চাই যে, আমরা এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে অবশ্যই ঝুঁকি নেব। অতীতে আমরা সফল হয়েছি। এই আন্দোলনেও আমরা সফল হব, এটা আমরা বিশ্বাস রাখি। এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের দিয়ে বলতে চাই, আসুন আপনারা আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হন।
যে লক্ষ্যগুলো আমরা তুলে ধরেছি, সেগুলো সামনে রেখে জনগণকে আরও সুসংহত করে ইনশাল্লাহ জনগণই ক্ষমতার মালিক হবে। আমাদের স্বপ্নের গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
বিএ-১৪/০৫-০৫ (ন্যাশনাল ডেস্ক)