রাজশাহীতে পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চান হাইকোর্ট

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে থাকা পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় দুটি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

এর আগে, ৩০ অক্টোবর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামকে কেন অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অভয়ারণ্য ঘোষণা করলে ওই আমবাগান ইজারাদারদের কী পরিমাণ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তা ৪০ দিনের মধ্যে জানাতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে আদালত পাখির বাসাগুলো না ভাঙার বিষয়েও আদেশ দিয়েছিলেন।

সেই আদেশ অনুসারে রাজশাহীর ডিসি লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, পাখির অভয়াশ্রম রক্ষা করতে হলে আমবাগানের মালিককে বছরে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা দেওয়া প্রয়োজন। আর স্থায়ীভাবে অভয়াশ্রম করতে আমগাছসহ জমি সরকারের অনুকূলে স্থায়ী বন্দোবস্ত নিতে লাগবে ২ কোটি ১২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

এরপর আদালত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে দুটি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চেয়ে মামলার শুনানি আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

উল্লেখ্য, একটি গণমাধ্যমে ‘পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেওয়া হলো ১৫ দিন’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পাখিদের বাসা ছাড়ার সময় দেওয়া হয়েছে ১৫ দিন। এর মধ্যে পাখিরা বাসা না ছাড়লে তাদের বাসা থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি তাদের বাসা ভেঙে দেওয়া হবে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে।

খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ২৫টি আমগাছে শামুকখোল পাখি বাসা বেঁধেছে। গত চার বছর ধরে এরা এই বাগানে বাচ্চা ফোটায়। বর্ষার শেষে এসে বাচ্চা ফুটিয়ে শীতের শুরুতে এরা আবার চলে যায়।

বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে এই বাগানের পাশেই সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, আইন অনুযায়ী যে কোনও বন্যপ্রাণী আটক, হত্যা, শিকার, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানা। এর নিচে বন্যপ্রাণী বিষয়ক যেকোনও তথ্যের জন্য যোগাযোগের একটি নম্বর দেওয়া আছে।

পরে ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারুমিতা রায়। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন।

বিএ-১৬/১৮-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)