বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় শঙ্কিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে বিধিনিষেধ শিথিল করায় সারা দেশে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বুলেটিনে এ আশঙ্কার কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই ৮ দিনের জন্য লকডাউনের যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে, তাতে সারা দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে চালু হওয়া গণপরিবহন, শপিংমল ও কোরবানির পশুর হাটে যদি স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মানা না হয়, তবে সংক্রমণের মাত্রা কমার কোনো সুযোগ থাকবে না।

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের মাত্রা ৩০ শতাংশ রয়েছে জানিয়ে তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, কোরবানির পশুর হাটে মাস্কের ব্যবহার ১০০ ভাগ করা না গেলে সংক্রমণের মাত্রা আপ্রাণ চেষ্টা করেও কমানো যাবে না। তাই জনে জনে যেন স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয় সেজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও অনুরোধ জানাই।

ঈদুল আজহার ছুটিতে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজারে ভ্রমণে না যেতে দেশবাসীকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রোবেদ আমিন জানান, গত মে ও জুন মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১২১৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিন জেলায় বছরের শুরু থেকে পাঁচ শতাধিক মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ৪৭৩ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে অনেক রোগীকে আইসিইউতে নিতে হচ্ছে বলে জানান রোবেদ আমিন।

করোনাভাইরাসের পাশাপাশি ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন হতেও তিনি দেশবাসীকে অনুরোধ জানান।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫২জনে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৮৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৮ জনে। বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ২৪৫ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪১২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ৪৯০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ।

এর আগে মঙ্গলবার ২০৩ জনের মৃত্যু হয় এবং করোনা শনাক্ত হয় ১২ হাজার ১৯৮ জনের।

এ ছাড়া গত ১২ জুলাই দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২০ করোনায় মারা যান। ১১ জুলাই দেশে সর্বোচ্চ ২৩০ জন মারা যান। ১০ জুলাই ১৮৫ জন, ৯ জুলাই ২১২, ৮ জুলাই ১৯৯ জন, ৭ জুলাই ২০১ জন, ৬ জুলাই ১৬৩ জন, ৫ জুলাই ১৬৪ জন, ৪ জুলাই ১৫৩ জন, ৩ জুলাই ১৩৪ জন, ২ জুলাই ১৩২ এবং ১ জুলাই ১৪৩ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এসএইচ-১৫/১৪/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)