সড়কের আবেদনে মিলছে আকাশপথের ভিসা!

হঠাৎ করে ভারতে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে নানা কঠোরতায় আবারও কমেছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ভারতে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত। ভারত যেতে সড়ক পথে ভিসার আবেদন করলেও মিলছে আকাশ পথের ভিসা।

বর্তমানে একদিকে আকাশ পথে বিমান ভাড়া ৩ গুণেরও বেশি আবার এক সপ্তাহের আগে মিলছে না কোনো টিকিট। এতে জরুরি প্রয়োজনে সময় মতো যাতায়াত করতে না পেরে চিকিৎসা,ব্যবসা ও শিক্ষাখ্যাত বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । গত সপ্তাহে দিনে যাত্রী যাতায়াতের পরিমাণ দুই হাজারের কাছাকাছি থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ শতাধিকের মতো। সংকটময় এমন মুহূর্ত মোকাবিলায় আগামীতে নিজ দেশে জরুরি এসব খ্যাতকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার আহ্বান সচেতন নাগরিকদের।

জানা গেছে, চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা আর ভ্রমণে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ১৮ লাখ পাসপোর্ট যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করতো। ভারতে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এতে জরুরি প্রয়োজনে ভারতে যেতে না পেরে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাত্রীরা। গত দুই বছরেও পিছু ছাড়েনি করোনা। এক এক সময়ে এক একটি নতুন রূপে সংক্রমণ ছড়িয়ে চলেছে।

সবশেষ নতুন ধরণ ওমিক্রন ছড়িয়েছে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে। ইতিমধ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৮ জন আক্রান্ত হলেও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৯২ জন। ভারতে অনেক রাজ্যে বন্ধ করা হয়েছে স্কুল কলেজ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রয়োজনে বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত চালু রয়েছে। এ অবস্থায় ভারতে সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলায় যাত্রী যাতায়াত নিরুৎসাহিত করতে দেখা গেছে ভারতীয় দূতাবাসকে। এতে সাধারণ মানুষের ব্যবসা, চিকিৎসা বা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভারত যাত্রা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিকিৎসাসেবী পাসপোর্টধারী যাত্রী আরতী দেবনাথ জানান, সড়ক পথের আবেদন করলেও মিলছে আকাশ পথের ভিসা। তিনগুণ বেড়েছে বিমান ভাড়া। এক সপ্তাহের আগে মিলছে না কোনো টিকিট। এত টাকা খরচ করে সাধারণ যাত্রীদের ভারতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উত্তরণে দেশে চিকিৎসা খ্যাত আরও উন্নত করা দরকার।

যাত্রী রুবেল জানান, একবার ভারতে যেতে দুই বার করোনা পরীক্ষা করাতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। নানা ভোগান্তিও বেড়েছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা খরচ কমালে সাধারণ যাত্রীরা উপকৃত হবেন।

ব্যবসায়ী শামিম বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে মাঝে মধ্যে ভারত যেতে হয়। এখন ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কড়াকড়িতে ইচ্ছে মত যাওয়া যাচ্ছে না। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার শুভঙ্কর কুমার মন্ডল বলেন, ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন যাত্রীদের করোনার র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন ৬৪ জন বাংলাদেশিকে পরীক্ষা করে ৪ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের রাখা হয়েছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা রেড জোনে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে যাত্রী সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

মঙ্গলবার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে গেছে ৪৪৫ জন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী। ভারত থেকে এসেছে ১৩৮ জন ভারতীয় নাগরিক। ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে সরকারেও নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার রয়েছে বেনাপোল বন্দরে।

এসএইচ-১৯/০৫/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)