একদিনে এত টিকা দেওয়া ‘বিশ্বের প্রথম ঘটনা’, বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি একদিনে আমাদের এক কোটি ডোজ করোনার টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু দিন শেষে আমরা ১ কোটি ১১ লাখ প্রথম ডোজ এবং আরও ৯ লাখ টিকার ২য় ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এটি নিঃসন্দেহে বিশ্বের প্রথম ঘটনা। এর আগেও আমরা একদিনে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি।

রোববার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রায় ৪ হাজার নবনিয়োগকৃত চিকিৎসকের ওরিয়েন্টশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এ টিকা কার্যক্রম সফল করতে আমাদের ১ লাখেরও বেশি মানুষ কাজ করছে। বিশ্বের বহু সংখ্যক দেশেরই ১ কোটির বেশি মানুষ নাই। সেখানে দিনে ১ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের করোনা মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম করেছে এবং বিশ্বের ১০ম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় বলেন, আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ২১ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেশের মানুষকে দিতে সক্ষম হয়েছি। এতে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৩ ভাগ এবং আমাদের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ সম্পন্ন করতে পেরেছি।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একটি দেশের ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা দরকার। টিকা গ্রহণে দেশের মানুষের উপচেপড়া উপস্থিতি দেখে আমরা আমাদের টিকাদান কার্যক্রম ২৬ ফেব্রুয়ারির পর আরও ২ দিন বাড়িয়ে দিয়েছি। এতে করে আমাদের ভাসমান জনগোষ্ঠীসহ অনেক টিকা অগ্রহণকারী ব্যক্তিও এই টিকার আওতায় চলে আসবে।

মন্ত্রী বলেন, এ টিকাদান কার্যক্রম সঠিকভাবে চলার কারণে এবং দেশের মানুষ অধিক হারে টিকা গ্রহণ করার ফলে আমরা এখন করোনায় বিশ্বে অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। এতে আমাদের অর্থনীতির চাকা উর্ধ্বমুখী হয়েছে। দেশের জিডিপি এখন ৬ এর বেশি হয়েছে। অথচ বিশ্বের অনেক দেশেরই জিডিপি মাইনাস হয়ে গেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় উপস্থিত নবনিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের নিজ নিজ পোস্টিংকৃত এলাকায় যোগদান করে নিজেদের দায়িত্ব সুচারুভাবে পালনের নির্দেশনা দেন।

এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, আগে দেশে মাত্র ১৮ হাজার চিকিৎসক ছিল। কিন্তু গত ৫ বছরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা নতুন করে ১৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। আগে দেশে নার্স ছিল মাত্র ২০ হাজার। গত ৫ বছরেই আরও নতুন করে ২০ হাজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং আরও অনেক নার্স, চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। এর সঙ্গে বেসিক বিষয়ের চিকিৎসকও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে ভালো মানের চিকিৎসা সেবা।

সেই ভালো মানের চিকিৎসা দিতেই সরকার আপনাদের নিয়োগ দিল। আপনারা নিজ নিজ কর্মস্থলে গিয়ে অসহায়, দরিদ্র মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবেন। সরকার আপনাদের আবাসন সুবিধাসহ সব ধরনের সুবিধা বৃদ্ধি করবে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহসহ অন্য বক্তারা।

এসএইচ-১৮/২৭/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)