এক বছরের প্রকল্পকাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও

লালমনিরহাটে এক বছর মেয়াদী ধরলা নদীর ওপর ৪৫০ মিটার তীররক্ষার কাজ গত ৫ বছরেও শেষ হয়নি। দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে নিলেও এ পর্যন্ত শেষ হয়েছে মাত্র ১০০ মিটারের কাজ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে তীররক্ষা কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে নদী ভাঙনে হারাতে হচ্ছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও অনেক পরিবার ও মসজিদ।

জানা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বাদাইটারী গ্রামে ধরলা নদীর তীররক্ষার এই প্রকল্প পাস হয়। কার্যাদেশ দেয়া হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে। এরপর কাজের চুক্তি হয় খুলনা শিপইয়ার্ড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডলি কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পকাজ শুরু করেন। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় শ্রমিকদের বিল পরিশোধ না করে কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যান।

পরে দীর্ঘ সময় কাজ বন্ধ থাকলে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসিনা-আলমকে কাজ দেয়। পরে নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করলেও তা ধীরগতিতে চলছে। ফলে আগামী বন্যায় হুমকিতে থাকলে মসজিদ, বসতবাড়ি ও আবাদি জমি।

মোগলহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কোনো খোঁজ খবর নেয় না। আর এক এক করে তিনটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে এসে কিছুদিন কাজ করে স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি পর্যন্ত না দিয়ে পালিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, কাজটি যথা সময়ে না হওয়ায় এলাকার যথেষ্ট ক্ষতি হচ্ছে। কয়েক বিঘা আবাদি জমি এরইমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। আগামীতে কিছু বসতবাড়িসহ একটি মসজিদ বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর আগে কাজটির টেন্ডার হয়। কাজটি নেয় নৌ বাহিনীর একটি সংগঠন। প্রথমের দিকে কাজ শুরু করে কিছু ব্লক তৈরি করে চলে যায়। ফলে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকে। কিছুদিন আগে কাজ শুরু করে আবারও বন্ধ রেখেছে। এভাবে তীররক্ষার কাজ কিছুদিন পরপর চালু হয়ে আবার বন্ধ হওয়ায় ধরলা নদীর ওই স্থানে ভাঙনের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। যথা সময়ে কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতো।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আবেদন করায় মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থ বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।

এসএইচ-১২/০৮/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)