‘একজন নোবেলজয়ীকে আসামি করেছেন, এতো তাড়াতাড়ি পার পাবেন না’

একজন নোবেলজয়ীকে আসামি করেছেন, এতো তাড়াতাড়ি পার পাবেন না। শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে জেরা করার সময় এ কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটে তরিকুল ইসলামকে জেরা করা শুরু হয়।

এদিকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে সাংবাদিকদের বের করে দেন বিচারক। এসময় ড. ইউনূসের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ‘এটা কি ক্যামেরা ট্রায়াল যে সাংবাদিকদের বের করে দেয়া হলো!’ তিনি বলেন, আপিল বিভাগেও সাংবাদিকরা থাকেন। তাদের সরে যেতে বলা হয় না। তাহলে এখানে কেন?

এ সময় বিচারক বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে বিচার শেষ করতে পারবো না আমরা।’ পরে বিচারক সাংবাদিকদের এজলাসের পিছনের দিকে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেন।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে আদালতে উপস্থিত আছেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।

গত ২২ আগস্ট ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণের পর ৩১ আগস্ট ফের সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন সকালে এই সাক্ষীর বাবা মারা যাওয়ায় বাকি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্যে আজকের দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে গত ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

গত ৬ জুন মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার মধ্যদিয়ে বিচার শুরু হয়। কিন্তু এ মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূস হাইকোর্টের আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট সে আবেদন খারিজ করার পর তার বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন আইনজীবীরা। আপিল আবেদনেও হাইকোর্টের সেই খারিজ আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর নিয়ম অনুযায়ী বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে গত ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটির শুনানি আবারও অনুষ্ঠিত হবে।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেছিলেন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।

এদিকে গত ৩০ মে ড. ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরও ১২ জনের নামে মামলা করে দুদক। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

এসএইচ-১৪/০৫/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)