সীমান্তে বাংলাদেশি যুবক হত্যা, বিএসএফের নামে মামলা

কুড়িগ্রামের রৌমারীর সীমান্ত এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) অজ্ঞাতনামা সদস্যকে আসামি করে রৌমারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত মানিক মিয়ার বাবা আব্দুল বাতেন। সোমবার রাতে রৌমারী থানায় মামলাটি করেন তিনি। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ রূপ কুমার সরকার। তিনি জানান, মামলাটি তদন্তাধীন।

পুলিশ জানায়, রোববার বিকেলে উপজেলার বন্দবের ইউনিয়নের বাঞ্জারচরের মোতালেব হোসেনের বাড়ির ঝুপড়ি ঘর থেকে মানিক মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শরীরের বুকে ও পাঁজোরে গুলির চিহ্ন ছাড়া দেখা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ৩৫ বছর বয়সী মানিক উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর গ্রামের গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে। সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হলে সহযোগীরা তাকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আইনি ঝামেলা এড়াতে মরদেহ বাড়িতে না নিয়ে আত্মীয় মোতালেবের বাড়িতে নেয়া হয়।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে সীমান্তের মোল্লারচরে আন্তর্জাতিক পিলারের পাশ দিয়ে মানিকসহ একদল লোক গরুপাচারের সময় ভারতের কুচনিমারা বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা পাচারকারীদের লক্ষ্য করে পরপর চার রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে মানিকের বুকে ও কোমড়ে গুলিবিদ্ধ হলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হাসপাতালে নেন সঙ্গে থাকা লোকজন।

শৈৗলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, সীমান্তে অবৈধ ব্যবসার কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। রৌমারী উপজেলার কয়েকটি সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানিকের মতো অনেকে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা এসব করতে যায়। ফলে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে।

রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপ কুমার সরকার বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা বিএসএফ সদস্যদের আসামি করে মানিক মিয়ার বাবা আব্দুল বাতেন হত্যা মামলা দায়ের করতে আসলে মামলা নেয়া হয়। এটি তদন্তাধীন। মরদেহের বা-পাঁজর ও বুকের ডানদিকে দু’টি ছোট ফুটো পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এ ঘটনায় বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বিজিবি। বিএসএফ গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিজিবির জামালপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি বলেন, ‘সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাবাজার ইন্ট্রিগেটেড চেকপোস্টে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক হয়েছে। গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করেছে তারা। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। অন্যান্য আইনি কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে করা হচ্ছে। থানায় মামলার বিষয়টি এখনও তাদের কাছে যায়নি বলে জানান তিনি।

এসএইচ-১৩/০৫/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)