তিন প্রার্থী এমপির পরিবারেই, বিদ্রোহীদের নিয়ে বিব্রত আ.লীগ

পাবনার বেড়া পৌরসভায় মেয়র পদে স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর পরিবারের ৩ সদস্যসহ মোট ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিনে তারা বেড়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিফ শামস রঞ্জন, ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম। এ ছাড়া মেয়র পদে আরও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডা. আব্দুল আওয়াল ও কে এম আব্দুল্লাহ। জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সংসদ সদস্যের পরিবার থেকেই তিন সদস্য প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় হাস্যরস ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিব্রত আওয়ামী লীগ নেতারাও।

সাংসদ শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, দলের কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করার চেষ্টা করছে। আমি বেড়া পৌরসভায় গত ১৭ বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছি। মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলেছি। আধুনিক নগর গড়ার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতেই জনগণের দাবির মুখে প্রার্থী হয়েছি।

মেয়র আব্দুল বাতেন আরও বলেন, দল মনোনীত প্রার্থী আমার ভাতিজা হলেও রাজনীতিতে নতুন, অনভিজ্ঞ তার তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নই, জনগণের পক্ষে নির্বাচন করছি।

এমিপি টুকুর ছেলে ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যাচাই-বাছাই করে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা আছে কিনা তা সময়ই বলে দেবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ নৌকার প্রার্থীকেই ভোট দেবে।

পরিবারের আরেক প্রার্থী টুকুর বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, আমার বাবা বদিউল আলম বেড়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। আমি দীর্ঘদিন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। জনগণের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি।

সাদিয়া আরও বলেন, পেশীশক্তি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে বেড়ায় সামাজিক মূল্যবোধ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের পথে। শান্তির জনপদ হিসেবে বেড়া পৌরসভাকে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।

তবে নিজ পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়াকে গণতান্ত্রিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন পাবনা ১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু। তিনি বলেন, পরিবার যখন বড় হয়ে যায়, তখন আলাদা আলাদা ইউনিট গড়ে ওঠে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। তবে যারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল বলেন, সংসদ সদস্যের নিজের পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী। দলের অন্য বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে মাঠে। এটি নৌকার ভোটারদের জন্য বিভ্রান্তিকর। দলের নেতারাও বিব্রত। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে আনতে চেষ্টা করছি।

এসএইচ-০১/০৩/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)