রাজশাহীতে ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রাণসংশয়

এই মুহূর্তে প্রাণসংশয়ের কথা জানিয়েছেন রাজশাহীর ৬টি সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার জরুরী সংবাদ সম্মেলনে করে তারা এ কথা জানান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০দলীয় জোটের ব্যানারে দুপুরে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনের কর্তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। একই সাথে রাজশাহী পুলিশের ডিআইজি, এসপি ও রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সিইসি অপসারনের দাবি ওঠে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহীর ৬টি আসনেই ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচরাণায় বাধা, নির্বাচন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে সরকার সমর্থকরা। প্রচারণার সময় ধানের শীষের নেতাকর্মীদের উপর হামলাও হচ্ছে।

এনিয়ে রিটানির্ং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছেনা। যতই দিন গড়াচ্ছে, সরকার সমর্থক ও তাদের ক্যাডার বাহিনীর দৌরাত্ম বাড়ছে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ভীত হয়ে পড়েছে।

নির্বাচনে লেবেল প্লেইং ফিল্ড নেই উল্লেখ করে মিনু বলেন, নির্বাচন কমিশনার ক্ষমতাশীনদের আজ্ঞাবহ। প্রহসণের নির্বাচন করতে উঠে পড়ে লেগেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। গণতন্ত্র রক্ষায় সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরী। যা এই নির্বাচন কমিশনানের অধীনে সম্ভব নয়। বুধবারের মধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগসহ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন দাবি করেন মিনু।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনিপর ভাইস চেয়ারম্যান ও রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হক বলেন, তাঁর এলাকায় সকল স্থান থেকে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে ক্ষমতাশীনরা। নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। সেইসাথে ধানের শীষের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আবু হেনা বলেন, বাগামারায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। কিছুদিন পুর্বে যুবলীগের এক নেতাকে তাদের দলের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে খবর প্রকাশিত হয়েছে এবং সেখানকার পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা নিজে স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন। অথচ পুলিশ চার্জসিটে বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার সঠিক তদন্ত দাবী করেন। থানার ওসিরও পদত্যাগ দাবি করেন আবু হেনা।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, প্রচারণার শুরুর পরদিন থেকেই নির্বাচনী এলাকায় নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে। ধানের শীষের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানো অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকার সমর্থকদের ক্যাডার বহিনী এই কর্মকা- করছে।

আইনী জটিলতায় পড়েছেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা। এ কারণেই তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হননি। তাছাড়া কারাবন্দি রয়েছেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে ধানের শীষের প্রর্থী আবু সাইদ চাঁদ। তার পক্ষে ছেলে রাকিব হাসান ওয়ালিদ বক্তব্য রাখেন।

ওয়ালিদের অভিযোগ, নৌকা প্রতীকের ক্যাডার বাহিনীদের অত্যাচারে বাঘা-চারঘাটের জনগণ অতিষ্ট। প্রচারণায় নামলেইন তিনি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে। পুরো এলাকায় ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া ভীত হয়ে নৌকার প্রার্থী ষড়যন্ত্র করে তার বাবা আবু সাইদকে কারাগারে আটকে রেখেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর ছয় সংসদীয় আসনের ধানের শীষের প্রধান নির্বাচনী এজেন্টসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএ-১৭/১৮-১২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)