রাজশাহী নগরীতে সাড়ে ৭ হাজার অবৈধ পাম্প

রাজশাহী মহানগরীতে অনুমোদনবিহীন প্রায় সাড়ে ৭ হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। পানি উত্তোলন ও সরবরাহে শৃঙ্খলা ফেরাতে সেই সকল পাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে রাজশাহী ওয়াসা। সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বহুতল ভবনে পানি উত্তোলন চলছে এসব নলকূপ দিয়ে। এগুলো চিহ্নিত করার হাজ চলছে। যেগুলো চিহ্নিত হয়েছে, তাদের নোটিশ পাঠানো শুরু হয়েছে। এরপর ব্যাপক আকারে অভিযান শুরু হবে।

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, নগরীর যে কোনো স্থানে ব্যক্তি উদ্যোগে গভীর নলকূপ (সাব-মার্সিবল পাম্প) বসাতে হলে অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক। এজন্য নির্ধারিত ফি দিতে হয়। কিন্তু রাজশাহী নগরীতে অনুমোদন নেয়া গভীর নলকূপ আছে মাত্র ১৪১টি। বাকিগুলো অনুমোদন ছাড়াই বসানো হয়েছে। এতে ওয়াসা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অনুমোদনহীন গভীর নলকূপের বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে তাদেরকে অনুমোদন প্রদান ও প্রদেয় ফি আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এতে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সম্ভব হবে নগরীতে মাটির নিচ থেকে কী পরিমাণ পানি উত্তোলন হচ্ছে, তার হিসাব নিরূপণ।

ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উপসচিব) এসএম তুহিনুর আলম বলেন, অবৈধভাবে পানি উত্তোলনকারী পাম্প মালিকদের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করার কাজও চলছে। একজন ম্যাজিস্ট্রেট এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তার আগে সবাইকে নোটিশ দেয়া হবে। এর আগে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। এরপরও যারা অনুমোদনের জন্য আবেদন করবেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ওয়াসার তথ্য মতে, আইন অনুযায়ী তাদের সরবরাহ করা পানি ব্যবহার করলে উপভোক্তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিল দিতে হয়। আবার কেউ এই পানি ব্যবহার না করে নিজ উদ্যোগে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি তুললেও টাকা দিতে হবে। দেড় থেকে চার ইঞ্চি ব্যাসের পাইপের জন্য আবাসিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে এককালীন ১০ হাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজার এবং শিল্প খাতে ২০ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। প্রতিবছর নবায়নের ক্ষেত্রেও একই পরিমাণ ফি দিতে হবে।

অন্যদিকে, ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপের ক্ষেত্রে আবাসিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ৪০ হাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬০ হাজার ও শিল্প খাতের জন্য ৮০ হাজার টাকা এককালীন অনুমোদন ফি লাগবে। একই পরিমাণ টাকা দিতে হবে বার্ষিক নবায়ন ফি হিসেবেও। ৮ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপের জন্য আবাসিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬০ হাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৯০ হাজার ও শিল্প খাতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে অনুমোদন ফি হিসেবে। ব্যবহারকারীকে বার্ষিক নবায়ন ফি সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাজশাহী ওয়াসার এই আইন চালু আছে।

১৯৯৬ সালের পানি সরবরাহ আইনের ২৪ ধারা অনুযায়ী, অনুমোদন ছাড়া কেউ ওয়াসার অধিক্ষেত্রের ভেতরে সুপেয় পানি সংগ্রহ, পাম্পিং, সঞ্চয় বা সরবরাহ করার অথবা পয়ঃসংগ্রহ, পাম্পিং ও পরিশোধনের জন্য কোনো অবকাঠামো নির্মাণ বা সংরক্ষণ করতে পারবে না। আগেই বলা হয়েছে, প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, নগরীতে অবৈধ গভীর নলকূপ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার, আর অনুমোদন আছে মাত্র ১৪১টির।

এসএইচ-২৮/১২/১৯ (নিজস্ব প্রতিবেদক)