রাজশাহীতে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজ

রাজশাহীর তানোর উপজেলার বনগাঁ চকরহমত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

স্লিপমানি ও সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাত, নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ঘটনায় অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন ও মা সমাবেশে গেলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাকে জানানো হয়।

তাৎক্ষণিক অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না প্রধান শিক্ষককে শোকজ করে। বিধিমালা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির জবাব চেয়ে কৈফিয়ত তলব করা হয়।

এ সময় উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার, উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম স্বপন সহ সংশ্লিষ্ট স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিপুল সংখ্যক স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

অভিভাবকদের অভিযোগে জানা যায়, বনগাঁ চকরহমত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়, স্লিপমানি ও সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে অন্য শিক্ষক এবং অভিভাবকরা প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নানা ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু করে।

এসব ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিভাবকরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিবাবকদের দায়ের করা সব অভিযোগের সত্যতা পায় চেয়ারম্যান। অনিয়ম ও দুর্নীতির কৈফিয়ত তলব করে প্রধান শিক্ষককে একটি শোকজ করা হয়।

এতে চেয়ারম্যান ময়না উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষক স্লিপ বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা ও ৪০ হাজার টাকা, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ হাজার টাকা ও বিদ্যালয় মেরামতের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কোনও উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের খাত দেখাতে পারেনি।

শোকজ নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, শ্রেণিকক্ষে পাঠটিকা ও উপকরণের তেমন কোনও ব্যবহার নেই। প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হওয়ার বিধান থাকলেও এতে প্রায়ই প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। তার এসব কার্যক্রম সম্পূর্ণ বিধি বহিভূত ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও উল্লেখ করা হয় ওই শোকজে।

এ ব্যাপারে বনগাঁ চকরহমত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী বলেন, আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি শোকজের জবাব সময় মতো দিয়ে দিবো। আমি কোনও অনিয়ম দুর্নীতি করিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জুবাইদা খানম বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহোদয় একটি প্রতিবেদন দিয়ে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীকে শোকজ করেছে বলে শুনেছি। সেইসঙ্গে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছেন। এর সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএ-১৮/২৫-০৯ (নিজস্ব প্রতিবেদক)