পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্য

টিএসআই গোলাম রহমান, এসপির দেহরক্ষী নুরুজ্জামান সুমন ও স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালা। এদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়

বিভিন্ন জেলায় যখন ঘুষ ছাড়াই পুলিশে চাকরি মিলছে তখন মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তারা বিশ্বস্ত চার পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে ৯০ জনের কাছ থেকে ঘুষের টাকা নিয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি ৭২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। যা জিডি মূলে মদারীপুর সদর থানার ভল্টে রক্ষিত আছে।

পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে অতিরিক্ত ডিআইজি সালেহ মোহাম্মদ তানভীর ঘুষ নেয়ার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জেলার সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুন মাদারীপুর জেলা থেকে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্যে শারীরিক পরীক্ষা নেয়া হয়। সেখান থেকে উত্তীর্ণদের ২৩ জুন সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের একটি কক্ষে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়। পরের দিন বিকেল ৫টার মধ্যে ফলাফল দেয়ার কথা থাকলেও রাত ১০টার দিকে ফলাফল জানানো হয়।

২৪ জুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান সুমনকে ঘুষ গ্রহণের নগদ টাকাসহ আটক করা হয়। এছাড়াও পুলিশ সদস্য ও পুলিশ লাইনের ম্যাস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন, টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছ থেকেও ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে নুরুজ্জামান সুমন ও জাহিদ হোসেনকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নজরদারিতে রাখা হয়। টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে মাদারীপুর জেলা থেকে অন্যত্র শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া চেষ্টা করে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের চাপে পুলিশ সুপার বিষয়টি স্বীকার করেন।

মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, ঘুষ কেলেঙ্কারির এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার হওয়া উচিত। বিচার না হলে দুর্নীতি আরও বাড়বে।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানা বলেন, মাদারীপুরের একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ হিসেবে কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। মাদারীপুরেও যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স তা করছে। যে সব জেলা থেকে আমরা অনিয়মের খবর পেয়েছি সেখানেই ব্যবস্থা নিয়েছি।

এদিকে মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার তার দেহরক্ষীকে টাকাসহ আটকের বিষয় বলেন, যার যার অপরাধের দায়ভার তারই।

বিএ-১৪/২৯-০৬ (আঞ্চলিক ডেস্ক)