সেই সুবর্ণচরে এবার গণধর্ষণের শিকার বিধবা নারী

পানীয়র সঙ্গে মাদক

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আবারও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক সন্তানের জননী বিধবা গৃহবধূ (২৫)। শনিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

শিশু সন্তানের গলায় অস্ত্র ধরে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। ওই নারীকে প্রচণ্ড মারধর করে আহতও করা হয়েছে।

রোববার সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে গত ৩১ মার্চ রাতে উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের স্থানীয় রুহুল আমিনের মৎস্য খামারে স্বামীকে বেঁধে রেখে ছয় সন্তানের জননীকে এবং ৩০ ডিসেম্বর রাতে বসতঘরে প্রবেশ করে স্বামী-সন্তান বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে রাতভর ধর্ষণ শেষে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছিল দুর্বৃত্তরা। ওই দুই আলোচিত ধর্ষণ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নারী ও চরজব্বার থানা পুলিশ জানায়, পেশায় পোশাক শ্রমিক এক সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর স্বামী এক মাস আগে মারা যান। এরপর তিনি তার সন্তান নিয়ে সুবর্ণচরের গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

শনিবার রাতে গৃহবধূ তার শিশু সন্তানকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১টার দিকে গৃহবধূর বসতঘরের দরজা ভেঙে তিন সন্ত্রাসী প্রবেশ করে। এ সময় গৃহবধূ চিৎকার দিলে তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার ভয় দেখায়।

গৃহবধূ আরও জানান, সন্ত্রাসীরা তার শিশু সন্তানের গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে তাকে ধর্ষণ করে। রাত ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত তিনজন মিলে তার ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

রোববার সকালে তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে চরজব্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহীম খলিল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে স্থানীয় লোকজন, নির্যাতনের শিকার নারী ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় অভিযান চালিয়ে জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলো- নুরুল হুদা (৫৮), নুর উদ্দিন (৪২) ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলোয়ার মাস্টার (৪৩)। তারা সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর মোজাম্মেল গ্রামের বাসিন্দা।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীকে ২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। ধর্ষণ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল সরকারি মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহেদ উদ্দিন বলেন, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএ-১৮/০৪-০৮ (আঞ্চলিক ডেস্ক)