শেরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ যুবক নিহত

শেরপুরে শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবরুণা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত আরও এক বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে সিংগাবরুণা সীমান্তের ১০৯২ পিলার সংলগ্ন পানবাড়ি এলাকার একটি ব্রিজের কাছে পাহাড়ি ঝোরা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত খোকন মিয়া (২২) উপজেলার সিংগাবরুণা ইউনিয়নের মাটিফাটা গ্রামের আজিজুল মেম্বারের ছেলে।

এ নিয়ে একইদিনে বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হলো। এর আগে সকাল ৮টার দিকে একই সীমান্তের পানবাড়ি এলাকার একটি রাবার বাগান থেকে উকিল মিয়া (১৯) নামের বিএসএফের গুলিতে নিহত আরেক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার মেঘাদল গ্রামের বঙ্গ সুরুজ মিয়ার ছেলে।

এছাড়া বাবেলাকোনা গ্রামের বদর আলীর ছেলে সুমন মিয়া নামের আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ১০৯১ ও ১০৯২ সীমান্ত পিলার সংলগ্ন জিরো পয়েন্টের মারাংপাড়া ব্রিজ এলাকায় বিএসএফের গুলিতে তারা হতাহত হন। হতাহতরা সবাই গরু ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গরু চোরাকারবারিদের একটি দল রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শ্রীবরদীর সিংগাবরুণা ইউনিয়নের পানবাড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। এই দলে উকিল মিয়া, খোকন মিয়া, সুমন মিয়াসহ আরও কয়েকজন রাখাল ছিলেন।

এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে উকিল মিয়া, খোকন মিয়া ও সুমন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। দলের অন্য সদস্যরা তাদের বাংলাদেশ সীমান্তের পানবাড়ি এলাকায় রাবার বাগান এনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

সেখানেই উকিল মিয়া ও খোকন মিয়ার মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে কর্ণঝোড়া সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুল হাই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ উকিল মিয়ার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর ২টার দিকে খোকন মিয়ার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকেলে ১০৯২ পিলার সংলগ্ন নো-ম্যানস ল্যান্ড এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবির ময়মনসিংহ সেক্টরের ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক শহিদুর রহমান ও বিএসএফ ২৬ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক বিশাল রানে দুই দেশের পক্ষে এই পতাকা বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। এতে বিজিবির পক্ষ থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কর্ণঝোড়া সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ সুবেদার খন্দকার আব্দুল হাই বলেন, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। পতাকা বৈঠকে ঘটনাটির কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

বিএ-১২/১৮-১১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)