চাল তুলতে এলেন ‘মৃত’ ব্যক্তি

এক বছর আগে মৃত্যু হয় মো. জাহাঙ্গীর নামে এক জেলের। অথচ তার নামে রয়েছে দুটি জেলে নিবন্ধন কার্ড। দুটির মধ্যে একটি নকল। দুটি কার্ড দিয়েই চলত চাল উত্তোলন। আজ শুক্রবারও জাহাঙ্গীরের কার্ড নিয়ে চাল নিতে আসেন এক ব্যক্তি। তাকে ধরে ফেলেন চেয়ারম্যান। জানতে পারেন ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য ওই ব্যক্তিকে চাল নিতে পাঠিয়েছেন!

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদে শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গেছে, চলমান ৬৫ দিনের অবরোধ পালনের জন্য জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ। এ সময় ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের মো. জাহাঙ্গীরের নামে দুটি জেলে নিবন্ধন কার্ড জমা হয়। তখন আসল নকল যাচাই বাছাই করার সময় জানা যায়, জাহাঙ্গীরের এক বছর আগে মারা গেছেন। তার কার্ড নিয়ে আসেন রাসেল নামে এক ব্যক্তি। তখন তাকে ধরে ফেলেন চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন।

রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, নিজের নামে বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ইউপি সদস্য মো. আলম ফকির তাকে একটি কার্ড দিয়ে চাল নিতে বলেন। রাসেল বলেন, আমি জাহাঙ্গীরকে চিনি না এবং মারা গেছেন তাও জানি না।

এ ব্যাপারে পরবর্তীতে ইউপি সদস্য আলম ফকিরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ওকে (রাসেল) কার্ড দেইনি। কোথা থেকে এনেছে জানি না। এটা আমার প্রতিপক্ষের চক্রান্ত। আমি কোনো জেলের মূল নিবন্ধন কার্ড উত্তোলন করিনি। আমাকে সকলে ফটোকপি দিয়েছে। মূল কার্ড চেয়ারম্যানের হাতে দিয়ে জেলেরা চাল নিচ্ছেন।’

ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি লতাচাপলী ইউনিয়নে জেলে নিবন্ধনের বেশ কিছু নকল কার্ড বানানো হয়েছে। ওই সমস্ত নকল কার্ড বাদ দেওয়ার জন্য আসল কার্ড জমা নিয়ে চাল বিতরণ করছি। মৃত জেলেদের নাম তালিকায় চিহ্নিত করা হলেও ভুল বশত জাহাঙ্গীরের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চাল বিতরণের সময় এক নারীও জাহাঙ্গীরের কার্ড নিয়ে আসেন। কার্ডটি দেখে আমার কাছে নকল মনে হয়।

এ সময় ইউপি সদস্য আলম ফকির কার্ডটি বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে বলে চাল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। আমি কার্ডটি আলাদা রেখে চাল দিয়েছি। আজ জাহাঙ্গীরের আসল কার্ডটি নিয়ে খাজুরা এলাকার রাসেল নামে এক যুবক চাল নিতে আসেন। তখন আসল নকল যাচাই বাছাই করার সময় জানতে পারি জাহাঙ্গীর এক বছর আগে মারা গেছেন। রাসেল আমার কাছে স্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য আলম ফকির কার্ডটি জমা দিয়ে চাল ছাড়াতে বলছেন।’

চেয়ারম্যান জানান, আসল-নকল কার্ডের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে পূর্ণ যাচাই-বাছাই করে চাল বিতরণ করা হবে।

এসএইচ-২১/১৮/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)