অপহরণের তিন দিন পর চাচার বাড়ির টয়লেট থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার

মাদারীপুরের শিবচরে অপহরণের ৩ দিন পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোরে পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুরের জাজিরায় নিহতের চাচার বাড়ির ভবনের নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের নিচ থেকে বালু চাপা অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। আপন বড় চাচী নার্গিস আক্তার দেখিয়ে দিলে আজ ভোর রাতে ২ বছর ৪ মাসের শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে চাচী নার্গিস আক্তার ও চাচাতো বোন হাফসা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পারিবারিক ও মামলার সূত্রে জানা যায়, শিবচরের কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার ওহাব বেপারির বড় ছেলে আবুল হোসেন বেপারির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী নার্গিস দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে পাশের এলাকায় বাবার বাড়িতেই থাকতেন।

স্বামী পীরের বাড়িতে গিয়ে মারা গেলেও নার্গিস এ মৃত্যুর জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকদেরই দায়ী করে আসছিলেন। এছাড়াও স্বামীর মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই ইসমাইল বেপারিকে নার্গিস বিয়ে করতে চাইলে পরিবারের লোকজন এতে রাজী হয়নি। উভয় ঘটনার সঙ্গে জমিজমা নিয়েও বিরোধ ছিল তাদের মধ্যে।

গত মঙ্গলবার ওহাব বেপারির বাড়িতে বেড়াতে আসে নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার (১৪)। পরদিন বুধবার সকালে চলে যাওয়ার আগে হাফসা চাচা ইসমাইল বেপারির স্ত্রী ময়না বেগমের কাছ থেকে তার একমাত্র শিশু সন্তান কুতুবউদ্দিনকে কোলে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কাউকে কিছু না জানিয়েই চলে যায়।

সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে ভাবী ও হাফসাকে বাড়িতে না পেয়ে কুতুবউদ্দিনের বাবা ইসমাইল বেপারি শিবচর থানায় অভিযোগ করে। অভিযোগ পেয়ে শিবচর থানার একাধিক টিম মাঠে নামে। একটি মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে তার মা নার্গিসের কাছে দিয়েছে, যদিও কোনো

কিছুতেই নার্গিস বিষয়টি স্বীকার করছিলেন না। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর নার্গিস তার ঘরের ভেতরের মধ্যে নির্মাণাধীন টয়লেটের মাটির নীচে শিশুটিকে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানান। পরে পুলিশ নার্গিসকে নিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে তার ঘরের টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে থাকা অবস্থায় কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘নার্গিস মূলত তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য তার শ্বশুরবাড়ির লোকদের উপর ক্ষিপ্ত,পরবর্তীতে বিয়ে নিয়েও ক্ষুদ্ধ ছিল। সে তার মেয়েকে দিয়ে শিশুটিকে খুব কৌশলে নিজের কাছে আনে। আমাদের ধারণা সে ও তার মেয়ে দুজনে মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নার্গিস নিজেই দেখিয়েছি লাশের অবস্থান।’

এসএইচ-০৭/১৭/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)