নববধূকে নিয়ে ফেরার পথে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে বরের আত্মহত্যা

চুয়াডাঙ্গায় চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে লাফ দিয়ে বোরহান উদ্দিন (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। রোববার রাত ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের কুলপালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বোরহান উদ্দিন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়নের নতুন দরবেশপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মিয়াজানের ছেলে ও মেহেরপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

পরিবারের সদস্যরা জানায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে পপি খাতুনের সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বোরহান উদ্দিনের। শনিবার দুই পরিবারকে না জানিয়ে তারা বিয়ে করে। বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার সিংহাটি গ্রামে বোরহান উদ্দিন চাচাতো বোনের বাসায় গিয়ে উঠে। একই দিন রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। রোববার রাতে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে সে চাচাতো বোনের বাড়িতে অবস্থান করছে। সেখানে উপস্থিত হন পরিবারের সদস্যরা।

নিহত বোরহানের মামাতো ভাই আলামিন বলেন, ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে হবে জানিয়ে বোরহানের বাবা আমাকে ডাকেন। তার বাড়িতে পৌঁছালে রাত ১০টার দিকে আমি মোটরসাইকেলে এবং একটি মাইক্রোবাসযোগে বোরহানের আরেক মামাতো ভাই ও তার বাবাসহ সেই চাচাতো বোনের বাড়িতে যাই। সেখানে পৌঁছানোর পর বোরহানের পিতা তাদের বিয়ে মেনে না নিয়ে বোরহানকে নিয়ে চলে আসতে চায়।

পরে দুই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বোরহানের বাবাকে বোঝালে তাদের বিয়েতে সম্মতি জানিয়ে ছেলেকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলেন। স্ত্রীকে রেখে একা বাড়িতে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় বোরহান। রাতেই মাইক্রোবাসযোগে নববিবাহিতা স্ত্রী পপি খাতুনকে নিয়ে তার বাবা নতুন দরবেশপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। যাওয়ার পথে কুলপালা নামকস্থানে পৌঁছালে চলন্ত মাইক্রোবাসের জানালা দিয়ে লাফ দেয় বোরহান। এসময় সামনে থেকে আসা একটি ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হন বোরহান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, পপি খাতুনের এর আগে দু’বার বিয়ে হয়েছিল। এজন্য ছেলের বাবা প্রথমে মেনে নিতে না পারলেও পরে সবার অনুরোধে মেনে নিয়েছিল। মাইক্রোবাসে আসার সময় এই নিয়ে ছেলেকে কটূক্তি করায় পিতার উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করে বোরহান উদ্দিন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, মারা যাওয়া যুবকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বোরহানের দুই পা ভেঙে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগেই তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনিনি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।

এসএইচ-১১/২৯/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)