মাটির কুমিরকে কুপিয়ে হত্যা করাই রীতি, নয়তো মাটির কুমির জীবন্ত হয়ে কামড়ে দিতে পারে জনপদের বাসিন্দাদের। এমন বিশ্বাস থেকেই যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসা পূজা লোকমুখে কুমিরপূজা নামে পরিচিত পেয়েছে।
তবে এ পূজার নাম বাস্তুপূজা। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে আসছে।
শুক্রবার দিনব্যাপী ঝালকাঠি জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় লোকজ সংস্কৃতির এ কুমির পূজা নানা আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
বাস্তুপূজা শেষে ঝালকাঠি লোকনাথ মন্দিরের পুরোহিত অমল ভট্টাচার্য সময় নিউজকে বলেন, বর্তমানে কুমিরপূজা নামে পরিচিত হলেও মূলত এ পূজার নাম বাস্তুপূজা। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে যাদের বসতভিটা কিংবা স্থাপনা রয়েছে তারাই বছরের বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন এ পূজার আয়োজন করে আসছেন যুগযুগ ধরে।
তিনি জানান, জনপদে বাস্তুভিটা রক্ষায় বাস্তু দেবীকে সন্তুষ্ট করতেই আয়োজন করা হয় নানা আচার। আর বাহন কুমিরের পিঠে চড়ে পূজিত হন দেবী বাস্তু।
এদিকে মিথ রয়েছে, পূজা শেষে দেবীর বাহন কুমিরটিকে কুপিয়ে প্রতীকী হত্যা করতে হবে, নয়তো মাটির কুমির জীবন্ত হয়ে কামড়ে দিতে পারে মানুষজনকে বিশেষ করে শিশুদের।
এ ব্যাপারে পুরোহিত অমল ভট্টাচার্য বলেন, মূলত প্রতীকী বলি দিয়ে অমঙ্গল বা অশুভকে তাড়াতেই কুমিরকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
জনপদের বাসিন্দাদের বাস্তুভিটা রক্ষায় বিশেষ এ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তাই কুমির পূজা নামে পরিচিতি পেয়েছে জানান তিনি।
দিনব্যাপী জেলা শহরের লোকনাথ মন্দির, জেলে পাড়া, বাঁশপট্টি, কাঁশারীপট্টিসহ শহর ও গ্রামাঞ্চলর বিভিন্ন এলাকায় বাস্তুপূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণেরও আয়োজন করা হয়।
এসএইচ-২৪/১৪/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)